আ.লীগ সরকারের সাবেক আরও ছয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে দুদক
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিগত সময়গুলোতে অনিয়মের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়া ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
এর অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক আরও ছয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে দুদক। এর মধ্যে অনুসন্ধান শেষ। সংগ্রহ করা হয়েছে অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থপাচার ও ব্যাংকে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য-প্রমাণ।
গত ১১ ডিসেম্বর দুদকের নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন কাজে যোগ দেন। একই দিনে কমিশনার হিসেবে যোগ দেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবর আজিজী। এরপর ১৫ ডিসেম্বর যোগ দেন আরেক কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ।
নতুন কমিশন যোগ দেওয়ার পর দুদকের প্রায় দেড় মাসের স্থবিরতার অবসান হয়। এর আগে ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে গত ২৯ অক্টোবর দুদক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ, কমিশনার আছিয়া খাতুন ও জহুরুল হক ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ২০২১ সালের ৩ মার্চ দুদক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান।
এদিকে, কমিশন গঠন হওয়ার পর গত সপ্তাহে ১৬টি মামলা ও ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। এর মধ্যে গত ১৫ ডিসেম্বর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও ছাগলকাণ্ডে সমালোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মো. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা রয়েছে। গত ১২ ডিসেম্বর সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তার ছেলে, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ হোসেন পলক ও তার স্ত্রী এবং সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক ছয়টি মামলা রয়েছে।
এরপর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এছাড়া ইসলামী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের ছেলেসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আলোচ্য সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের চার সদস্য, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ঢাকা-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ আওয়ামী লীগের ১৩ নেতাকর্মী, আমলা ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।
অনুসন্ধান শেষে সপ্তাহের প্রথমদিন রোববার (২২ ডিসেম্বর) ৩৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ১৬৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের নামে মামলা করেছে দুদক। এছাড়া দুই কোটি ৫২ লাখ ৮৪ হাজার ৫৮২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রিমনের স্ত্রী রওনককে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলেছে সংস্থাটি। এছাড়া চলতি সপ্তাহে প্রভাবশালী আরও ছয় মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর শওকত হাচানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। এ বিষয়ে দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, হাচানুর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। তিনি নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদক সূত্র জানায়, সাবেক এ এমপির নামে বরিশালের আগরপুর রোড, রূপাতলী, জাগুয়া, দক্ষিণ আলেকান্দা, ঢাকার নলটোনা, বরগুনার পাথরঘাটায় মোট এক কোটি ৫১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৩ টাকার অ-কৃষি জমি রয়েছে। এছাড়া বরগুনার কাঠাঁলতলী, মাদারতলী, রায়হানপুর, গহরপুর, চরলাঠিমারা মৌজাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫৮ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের কৃষি জমি রয়েছে। তার নিজ নামে ব্যবসার পুঁজি রয়েছে ১৫ কোটি এক লাখ ৮৩ হাজার ৬৪০ টাকা এবং ৪৬ লাখ টাকার অন্যান্য বিনিয়োগ রয়েছে।
দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন শওকত হাচানুর রহমান। গত ১৬ অক্টোবর দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
সাবেক এ সংসদ সদস্যের নিজ নামে ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো, মাইক্রো বাস, টয়োটা প্রিমিও কারসহ তিনটি গাড়ি, স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ও নগদ ১৮ লাখ ৫০ হাজার ৫৪০ টাকার থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া দেশে-বিদেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের কাছে তথ্য রয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী, তার স্বামী শামীম তালুকদার ও মেয়ে মুনতাহা রিদায়ী লামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয় গত ২০ আগস্ট। গত ১ অক্টোবর মৌলভীবাজার থেকে স্বামীসহ গ্রেফতার হন হেনরী। চলতি সপ্তাহে হেনরীর বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা হতে পারে।
তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা হতে পারে। ২০০৮ সাল থেকে গত প্রায় সাড়ে ১৫ বছরে হেনরীর সম্পদ ৮৮৪ গুণ বেড়েছে। একই সময়ে তার স্বামী শামীম তালুকদার লাবুর সম্পদ বেড়েছে ১৩৬ গুণ। মামলা হতে পারে তার স্বামীর বিরুদ্ধেও।
প্রায় দেড় দশক আগে এ সংসদ সদস্যের বার্ষিক আয় ছিল এক লাখ ২২ হাজার এবং ব্যয় ছিল ৮০ হাজার টাকা। তখন তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ছয় লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকার। এখন তার সম্পদ বেড়ে হয়েছে ৫৬ কোটি আট লাখ ৯৫ হাজার ৬০২ টাকা। হেনরীর সম্পদের বাজারমূল্য প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। এ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব সম্পদ অর্জন ও বিদেশে পাচারের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
সিরাজগঞ্জে হেনরী ও তার স্বামীর ১৬টি বাড়ি, দুটি রিসোর্ট, একটি গরুর খামারসহ কয়েক হাজার শতাংশ কৃষি ও অকৃষি জমি রয়েছে। হেনরী রয়েছে অন্তত নয়টি বিলাসবহুল গাড়ি। ঢাকার মিরপুরে ফ্ল্যাট ও জমি আছে। আছে ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেনরী সিরাজগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এর আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। হেনরী বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।
জানা যায়, নির্বাচনে হারার পর ২০০৯ সালে হেনরীকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার দায়িত্ব পালনকালে আলোচিত হলমার্ক ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে ঘুস নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঋণ জালিয়াতির হোতা হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেও কয়েকজন ঘুস নিয়েছেন বলে জানান। দুদক তানভীর ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগপত্র দাখিল করলেও পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। তাদের অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়। হেনরীকেও দায়মুক্তি দেয় দুদক।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এবং পটুয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. মহিববুর রহমানের বিরুদ্ধে দুটি, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও ঢাকা-২ আসনের সাবেক এমপি কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি মামলা হতে পারে।
গত আগস্টে মহিববুর রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দুদক সূত্র জানায়, পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দরের আশপাশে মহিববুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার রেখার নামে রয়েছে অন্তত ৩৭ একর জমি আছে। জমিগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় দেড়শ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে মহিববুর রহমান এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ফাতেমা আক্তার রেখার জমি কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এদিকে, গত ১৮ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা-১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুলকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গত ১৪ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সবগুলো জাতীয় নির্বাচনে জয় পান এ আওয়ামী লীগ নেতা। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ প্রতিমন্ত্রী ও ২০১৪ সালে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে প্রথমে সদস্য ও পরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হলে দলের মধ্যে তার প্রভাব বেড়ে যায়।
২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ের পর তার বিরুদ্ধে নিয়োগ, বদলি ও খাদ্য আমদানিসহ নানা কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০১৫ সালের জুনে ব্রাজিল থেকে ৪০০ কোটি টাকা মূল্যের দুই লাখ টন পচা গম আমদানির ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন কামরুল।
দুদক সূত্র জানায়, কামরুল ইসলাম নিজের ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। তিনি ও তার অন্য আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। কামরুলের নামে রাজধানীর ৪৮/১ নম্বর আজগর লেনে চারতলা বাড়ি নির্মাণ, মিরপুর আবাসিক এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট, মিরপুর হাউজিং এস্টেটে চার কাঠা জমি, নিউ টাউনে ১০ কাঠা জমি এবং দুটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মনসুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি, সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বিরুদ্ধে তিনটি এবং আগামী ২৬ ডিসেম্বর সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী এবং যশোর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা হতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয় গত আগস্ট মাসে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তাদের নামে।
দুদকের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরসহ কয়েকটি দেশে। বিদ্যুৎ খাত থেকে হরিলুট করে এ বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে একটি কোম্পানি খুলে সেই কোম্পানির মাধ্যমে নসরুল হামিদের হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এ কোম্পানি প্রতিষ্ঠাকালে নসরুল হামিদ তার নিজের যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত বাসভবনের ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বিপুর বাড়ির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪৩ কোটি টাকা।
বিগত সরকারের সময়ে বিদ্যুৎ খাতে হরিলুটের অন্যতম উৎস ছিল কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। তখন বিনা টেন্ডারে প্রয়োজনের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দেওয়া হয়। জানা গেছে, নসরুল হামিদ ও তার স্ত্রী সীমা হামিদ এবং ছেলে জারেফ হামিদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করা হবে।
নসরুল হামিদের মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, অনুসন্ধান শেষে তা যাচাই-বাছাই করে কমিশন অনুমোদন দিলেই মামলা দায়ের করা হয়।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বলেন, কোনো বিশেষ ক্যাডার বা ব্যক্তির প্রতি আনুকূল্য দেখানোর সুযোগ নেই। কমিশন প্রজাতন্ত্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এ বার্তা দিতে চায়। আইন ও বিধি অনুযায়ী কমিশন কাজ করবে।