যুক্তরাজ্য ইউনূস-তারেক বৈঠক সংকট নিরসনে হতে পারে ‘টার্নিং পয়েন্ট’: ফখরুল
যুক্তরাজ্য সফররত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকটি দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ বৈঠকে নতুন ‘ডাইমেনশন’ সৃষ্টি হতে পারেও মনে করেছেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি (ইউনূস) যে হোটেলে উঠেছেন সেখানেই বৈঠক হবে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ মিটিংয়ের জন্য আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটির পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করছি যে, এটি বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক সংকট তা কাটাতে পজেটিভ ভূমিকা রাখতে পারে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সাম্প্রতিককালের রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট, তাতে এ বৈঠক একটি বড় ইভেন্ট। এটি একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ বৈঠকটি হলে অনেক সমস্যার সমাধান হতে পারে। অনেক কিছু সহজ হয়ে যেতে পারে। নতুন ডাইমেনশন সৃষ্টি হতে পারে। সম্ভাবনা অনেক। এখন সেটা নির্ভর করবে আমাদের নেতাদের (ড. ইউনূস-তারেক রহমান) ওপর, তারা কীভাবে সেই সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যাবেন। আমরা আমাদের দলের তরফ থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে সম্পূর্ণ অথোরিটি দিয়েছি, তার সাফল্য প্রার্থনা করেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা (বৈঠক) আমরা বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই যখন থেকে প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে যাবেন সিদ্ধান্ত হয়েছে তখন থেকেই মোটামুটি আলোচনা হচ্ছিল যে, সেখানে যেহেতু আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আছেন একটা সাক্ষাৎ হতে পারে। এটার একটা সম্ভাবনা তখন থেকেই শুরু হয়েছিল। এখন এটি ম্যাচিউর হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গতকাল (সোমবার) রাতে আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিংও হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেন। উনাকে (তারেক রহমান) ফরমালি দাওয়াত করা হয়েছে মিটিংয়ের জন্য। ১৩ তারিখ (শুক্রবার) স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বৈঠকের সময় দেওয়া হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ হওয়াটা আমি বড় ইভেন্ট বলে মনে করি। ইটস অ্যা মেজর পলিটিক্যাল ইভেন্ট। আমার মনে হয়, এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ইমপোরটেন্ট ইভেন্ট। আমি মনে করি, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবেও এই বৈঠকের গুরুত্ব অনেক বেশি।
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ বা সময় নিয়ে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপি বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার শুরুতে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের কথা বললেও কয়েক দিন আগেই ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা। যদিও বিএনপি শুরু থেকেই এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করে আসছে।
এবার লন্ডনে ১৩ জুনের বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন, দেশের বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপট এবং কৌশলগত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।