পৌনে দুই লাখ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে
জেটিভি রিপোর্ট: আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বড় একটি সমস্যা হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের তুলনায় শিক্ষক সংখ্যা খুবই কম। যা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে বড় বাধা বলে মনে করেন শিক্ষাবিদেরা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষাব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে পৌনে দুই লাখ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ অনুমোদন করেছে মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৩০ মে বেসরকারি স্কুল-কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো ২০১৮ অনুসারে বর্ধিত ২০টি পদে নিয়োগের আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে জনবল বাড়বে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে। এসব প্রতিষ্ঠানে সাতজন শিক্ষক ও তিনজন কর্মচারী, মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে পাঁচজন শিক্ষক ও একজন কর্মচারী এবং কলেজ পর্যায়ে ছয়জন করে বাড়বে বলে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, যে অর্থবছর যে পদে নিয়োগে উল্লেখ করা হয়েছে, সে সময়েই নিয়োগ হতে হবে। অন্যথায় এমপিও দেওয়া হবে না। আর যেসব পদে এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগের সুযোগ রয়েছে সেসব পদে তারাই নিয়োগের সুপারিশ করবে।
শিক্ষা মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে, আগের এমপিও এবং জনবল সম্পর্কিত নীতিমালা অনুযায়ী, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক ও তিনজন কর্মচারীর পদ ছিল। এখন ১২ জন শিক্ষক ও ছয়জন কর্মচারীর পদ তৈরি করা হয়েছে। সেই হিসাবে তিন হাজার ৩২৬টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে ২৩ হজার ২৮২ জন শিক্ষক এবং ৯ হাজার ৯৭৮ জন কর্মচারী নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আগে সাধারণত শিক্ষক ১১ এবং কর্মচারীর পদ ছিল পাঁচটি। এবার বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৫ জন শিক্ষক, একজন সহকারী গ্রন্থাগারিক ও ছয়জন কর্মচারীতে। অতিরিক্ত শ্রেণি শাখা ছাড়াই তারা ২২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারবে। সেই হিসাবে ১২ হাজার ৭৭৩ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬৩ হাজার ৮৫৬ জন শিক্ষক এবং ১২ হাজার ৭৭৩ জন কর্মচারী নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হলো। একইভাবে পাঁচ হাজার ৩৭১ দাখিল মাদরাসায় ২৬ হাজার ৮৫৫ জন শিক্ষক এবং পাঁচ হাজার ৩৭১ জন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া যাবে।
কলেজে শিক্ষক, প্রদর্শক ও কর্মচারীর সংখ্যা ২৪ থেকে বাড়িয়ে ৩০ করা হয়েছে। সেই হিসাবে দুই হাজার ৩৬৩ সাধারণ কলেজে ১৪ হাজার ১৭৮ এবং দুই হাজার ২৩৫ আলিম পর্যায়ের মাদরাসায় ১৩ হাজার ৪১০ জন অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া যাবে। অর্থাৎ স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা মিলিয়ে নতুন এক লাখ ৬৯ হাজার ৭০৩ জন নতুন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হলো। সব পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি হলে অতিরিক্ত শ্রেণি শাখার নিয়ম অনুযায়ী, অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ ও এমপিও প্রদানেরও সুযোগ রাখা হয়েছে।
বর্তমানে দেশে ২৬ হাজার ৬৮ এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা রয়েছে। এতে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। এর বাইরে এমপিওভুক্ত কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে প্রায় দুই হাজার। সরকারের নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মধ্যে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা হবে প্রায় সাত লাখ।