বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই তো ক্যাসিনো সম্রাট: তথ্যমন্ত্রী
আত্মহতি দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই তো ক্যাসিনো সম্রাট। আর তারাই ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান নিয়ে কটাক্ষ করছে।’
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসকাবে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে নারী পুরোধা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার-এর আত্মহতি দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে মন্ত্রী একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে দেখেছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার আয়কর রিটার্নে ঘোষণা করেছেন তার আয়ের একটি বড় উৎস হচ্ছে ক্যাসিনো। কারণ ইংল্যান্ডে ক্যাসিনো থেকে আয় হলে সেটির কর দিতে হয় না। বিএনপি এমন ক্যাসিনো সম্রাটকে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানিয়ে রেখেছে আর তারাই ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান নিয়ে কটাক্ষ করে!’
‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বলবো নিজেদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দিকে তাকান, তাদের হাত ধরেই এই সংস্কৃতি বাংলাদেশে চালু হয়েছে’, বলেন ড. হাছান।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনারা এই সমস্ত অপসংস্কৃতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। হিযবুল বাহার জাহাজে করে বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে গিয়ে তাদের মধ্য থেকে সন্ত্রাসী বানিয়ে রাষ্ট্রকে কলুষিত করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মদ, জুয়া ও হাউজিং বন্ধ করেছেন। আর এগুলো সব জিয়াউর রহমান চালু করেছেন। জিয়াউর রহমান সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহ’ সংযোজন করেছিলেন। আর ‘বিসমিল্লাহ’ বলে মদ, জুয়া, হাউজিও চালু করে দিয়েছেন। যাদের একটু বয়স হয়েছে এটি নিশ্চয়ই তাদের মনে আছে।’
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আছি, অনেক অনুপ্রবেশকারি আমাদের দলে ঢুকেছে আবার অনেকের নৈতিক স্খলন ঘটেছে, এবং সেই কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দলমত নির্বিশেষে যে সাঁড়াশি অভিযান চলছে, সেটি হচ্ছে রাষ্ট্র ও সমাজকে পরিশুদ্ধ করার লক্ষে এবং সব ধরণের অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘দলমত নির্বিশেষে কে কোন পথের বা মতের সেটি না দেখে আজকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আশা করছিলাম জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য সংগঠন যেভাবে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে, সেভাবে বিএনপিও অভিনন্দন জানাবে। যে অপকর্ম তারা বন্ধ করতে পারেনি বরং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল, সেটি প্রধানমন্ত্রী বন্ধ করেছেন। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো উচিত। সেটি না করে গত কয়েকদিন ধরে দেখতে পাচ্ছি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব তার আশেপাশে যারা বাংলাদেশে কাসিনো সংস্কৃতি চালু করেছিল, সেই সহযোগীদের আশেপাশে রেখে তিনি আজকে জুয়া খেলার বিরুদ্ধে, ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে সেটি নিয়ে কটাক্ষ করছেন, যা কোনভাবেই কাম্য নয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা এ অভিযানের প্রশংসা করতে পারছেন না, সেটি তাদের রাজনৈতিক দীনতা। এবং তারা যে এটি করতে পারেননি বরং এই সংস্কৃতি চালু করেছিলেন, সেই ব্যর্থতা ঢাকার জন্যেই তারা নানাকথা বলছেন। বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো দেশকে কলুষমুক্ত করার জন্যে এবং দেশ থেকে সব ধরণের অনাচার এবং অবৈধ কর্মকাণ্ড নির্মূল করার জন্য আমরা একযোগে কাজ করবো। আপনাদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য অযথা সমালোচনা করবেন না।’
প্র্রীতিলতাকে ভারতবর্ষের ইতিহাসে অন্যতম সেরা বিপ্লবী বীরকন্যা হিসেবে আখ্যা দিয়ে এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রীতিলতা কোনো সাধারণ বিপ্লবী ছিলেন না, একজন অসম্ভব মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পর তার সাহসিকতা, একাগ্রতা, বুদ্ধিমত্তা এবং দেশমাতৃকার প্রতি তার যে গভীর ভালোবাসা ফুটে ওঠে, সেকারণে প্রীতিলতা বিপ্লবীদের মধ্যে অনন্য হয়ে রয়েছেন।’
ঢাকায় প্রীতিলতা কিংবা সূর্যসেনের নামে স্থাপনা হওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘চট্টগ্রামে প্রীতিলতার জন্য অনেক কিছু রয়েছে, প্রীতিলতা হল আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রীতিলতা হল আছে। এবং কিন্তু ঢাকা শহরে প্রীতিলতা কিংবা সূর্যসেনের নামে কোনো স্থাপনা বা আবক্ষ মূর্তি নেই। একটি হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনেকরি।’
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অভিনেত্রী সারাহ্ বেগম কবরীর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, ঢাকা মহানগর দণি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ, প্রচার সম্পাদক আকতার হোসেন, ঢাকা মহানগর দণি আওয়ামী লীগের সদস্য মতিন সরকার, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।