স্পন্সরের সংকটে বিসিবি ও বাফুফে

0

মাঠের খেলায় জাতীয় ক্রিকেট দলের বাজে পারফরম্যান্সের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) । জাতীয় দল তো বটেই, ‘এ’ দল, অনূর্ধ্ব-১৯ এবং নারী দলের জন্য টাইটেল স্পন্সর চেয়ে দরপত্র আহ্‌বান করেও বোর্ড এখন পর্যন্ত কারোর কাছ থেকে সাড়া পায়নি। নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও কোনো প্রতিষ্ঠানই টাইটেল স্পন্সর হওয়ার জন্য দরপত্র জমা দেয়নি। বিসিবি ‘বিড’ করার সময় বাড়ালেও তাতে লাভ হয়নি। বরং পরিস্থিতি সামলাতে এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বোর্ডকে বাধ্য হয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে দর-কষাকষিতে যাচ্ছে। ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) অবস্থা আরো বেহাল। মাঠে হতশ্রী পারফরমেন্স ফুটবলারদের। তারওপর ফুটবল ফেডারেশনের অস্বচ্ছতায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে স্পন্সর প্রতিষ্ঠানগুলো।

সঙ্গে যোগ হয়েছে ‘করোনাভাইরাস’ ইস্যু। কোনো স্পন্সর ছাড়াই মাঠে গড়িয়েছে পেশাদার ফুটবল লীগের ১২তম আসর।  
গত ৮ই জানুয়ারি নতুন চুক্তির জন্য দরপত্র আহ্‌বান করে বিসিবি। আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের দর প্রস্তাব জমা দেয়ার জন্য ২৬শে জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু প্রথম দফায় কোনো প্রতিষ্ঠান বিড না করায় সময় বাড়ানো হলেও তাতে কোনো ফল হয়নি। অথচ ২০১৮ সালের ৭ই আগস্টে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন অপারেটর রবির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পর ১লা সেপ্টেম্বর ২০১৮ থেকে ৩১শে জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত ১৭ মাসের চুক্তির জন্য বিসিবিকে ইউনিলিভার দিয়েছিল ৩৩ কোটি টাকা। এবার ১লা ফেব্রুয়ারি ২০২০ থেকে ৩১শে মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত ৩৮ মাসের চুক্তির জন্য সর্বশেষ প্রাপ্তির প্রায় ৩ গুণ প্রত্যাশা করেছিল বিসিবি। তারা এবার দরপত্রে ভিত্তিমূল্য ধরেছে ৮৫ কোটি টাকা। এই ভিত্তিমূল্যে কেউ সাড়া দিচ্ছে না। বিসিবি’র এক পরিচালক বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য বিব্রতকরই। এর আগে আমরা বরং অন্য রকমই দেখেছি। অবশ্য জাতীয় দলের বাজে পারফরম্যান্সই এর মূল কারণ হতে পারে। ২০১৫’র বিশ্বকাপ থেকে জাতীয় দল দারুণ পারফর্ম করতে শুরু করার পর আমরা স্পন্সরদের হুমড়ি খেয়েই পড়তে দেখেছি। এখন মুখ ফিরিয়ে নেয়াকে তাই বাজে পারফরম্যান্সের ফলই ধরতে হবে। তবে বিসিবির আশা, যুব বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে আসা আকবর আলীদের কারণে হলেও স্পন্সর আসবে। সোয়া তিন বছর মেয়াদি চুক্তির বিপরীতে প্রত্যাশিত মূল্যও পাওয়া যাবে। বিসিবির ওই পরিচালকের ভাষ্য, কোনো বিডই যখন জমা পড়েনি, তখন হয়তো অন্য ব্যবস্থায় আমাদের যেতে হবে। কিছু প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বসতে হবে। আশা করি আকবরদের সাফল্যে এবার টাইটেল স্পন্সর হওয়ার আগ্রহ দেখাবে অনেক প্রতিষ্ঠানই।
এদিকে ফুটবলে মাঠের সফলতা নেই দীর্ঘদিন। ঘরোয়া ফুটবলকে কেন্দ্র করে যাও দু’একটি স্পন্সর মেলে, এ বছর তারও দেখা নেই। করোনাভাইরাসের প্রভাব চীন ছাড়িয়ে বিশ্বের অন্য দেশেও। আতঙ্কে দিন পার করছে মানুষ। করোনাভাইরাসের কারণে নাকি দেশের ফুটবল স্পন্সর পাচ্ছে না- এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ। তাই স্পন্সর ছাড়াই মাঠে গড়িয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় ফুটবল আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল)। গত বছর আইএসপি (ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস পার্টনারস) মার্কেটিং এজেন্টের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি করে বাফুফে। প্রতিষ্ঠানটি বাফুফের অধীনে যত ঘরোয়া আসর (প্রিমিয়ার লীগ থেকে মহানগরীর অধীনে থাকা লীগসমূহ) আছে সেগুলোর স্পন্সর করবে এই মর্মে দুপক্ষের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যদিও এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সম্পর্কে খুব বেশি অবগত নয় গণমাধ্যম। কত টাকায় বাফুফের সঙ্গে আইএসপির চুক্তি হয়েছে বিষয়টি সব সময়ই গোপন রেখেছে বাফুফে। সাধারণ সম্পাদক সোহাগকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলেই উত্তর মিলেছে বেশ ভালো এমাউন্টেই চুক্তি হয়েছে। চুক্তি কত টাকা কিংবা প্রকাশ করা না করার এখতিয়ার বাফুফের। তবে স্পন্সর ছাড়া লীগের মতো বড় আসরের পর্দা ওঠা দুঃখজনক। কেন এবার স্পন্সর ছাড়াই লীগ মাঠে গড়াল- এমন প্রশ্নে সোহাগ জানান, প্রিমিয়ার লীগের সঙ্গে স্পন্সরশিপ রাইট রয়েছে আইএসপির (ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস পার্টনারস)। আইএসপি আমরা সবাই জানি এটি একটি চায়নাবেজড কোম্পানি। তাদের মূল অফিসটা যেহেতু চায়নাতে; তারা আমাদের কাছে কিছুটা সময় নিচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে চায়নার সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আমদানী রপ্তানীসহ সকল ধরনের কাজগুলো স্লথ রয়েছে। আইএসপির সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে; তারা আমাদের সময় মতো লীগ শুরু করতে বলেছে। তারা সব ধরনের কাজ শেষ করে রেখেছে। টাইটেল স্পন্সর যারা রয়েছে লীগের দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর ঘোষণা করা হবে। গতবারও তাই হয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com