দুদক ও বিচার বিভাগ শেখ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল: আইন উপদেষ্টা

0

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, দুর্নীতি একটা গ্রহণযোগ্য মবে পরিণত হয়েছিল। কেউ কোনও প্রশ্ন করতো না। অবৈধ বিত্ত নিয়ে গর্ব করতো। দুর্নীতি যে খারাপ জিনিস এটা মনে করার সংস্কৃতি পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসে রাজধানীর আইডিইবি ভবনে দুর্নীতি দমন কমিশন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমরা দেখলাম একজন বেহায়া প্রধানমন্ত্রী তার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে বলে হাসতে হাসতে জাতির সামনে বলছেন। গত ১৫ বছর আমরা দেখেছি, ১০০ টাকার বালিশ চার হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। বাংলাদেশের একজন ব্যবসায়ী সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনী হয়েছে। ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলাকায় এক সময় ছিনতাইকারী হিসেবে পরিচিত এক লোক হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে।

তিনি বলেন, দেখা হলে আওয়ামী লীগ নেতারা বলতেন আপা তো কিছু করতে পারতেন না ওনার ছোট বোনের জন্য। বোনের প্রতি কী মায়া। বিভিন্ন আড্ডায় শুনতাম শেখ হাসিনার ক্যাশিয়ার কে, শেখ রেহানার ক্যাশিয়ার কে। সালমান তার ক্যারিয়ার। জয়ের টাকা কার মাধ্যমে যায়। পলক কার ক্যাশিয়ার। সবাই শুনেন নাই? দুদক ছিল, উচ্চ আদালত ছিল। কোনও বিচার হয়েছে? কোনও বিচার হয় নাই।

উপদেষ্টা বলেন, বিচার কার হতো? খালেদা জিয়ার বিচার হতো। তিন কোটি টাকা ছয় কোটি হয়েছে, একটা টাকা আত্মসাৎ হয়নি। প্রক্রিয়াগত ভুলের কারণে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে দুদক ও বিচার বিভাগ মিলে ১০ বছরের সাজা দিয়েছে। আর সেই চোর প্রধানমন্ত্রী, যার পুরো পরিবার ছিল চোর, তিনি সারা দেশে ঘুরে বলে বেড়াতেন, খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছে। এই চোরের সামনে কেউ কোনও কথা বলতো না। দুদক তার দাসে পরিণত হয়েছিল। বিচার বিভাগ তার দাসে পরিণত হয়েছিল। দেশে এমন পরিস্থিতিতে বলতে পারেন কাজ করতে পারেন নাই। এখন তো সেই পরিবেশ নাই। এখন তো আপনাদের কেউ বলে না যে এই চোরের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে না। এখন তো কেউ হস্তক্ষেপ করছে না। বিগত সরকারের আমলে মন্ত্রী-এমপিরা হাজার হাজার টাকা লুটপাট করে পাচার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আগের কমিশন যে অনুমোদন দিয়ে গেছে সেগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন। দেখান ভালো পরিবেশ পেলে আপনারা কাজ করতে পারেন। এটাই আপনাদের কাছে আমাদের এবং সারা দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা। অন্যের ঘাড়ে দোষ দিয়ে নিজের দুর্নীতি আড়াল করবেন না। আমাদের তরুণ প্রজন্ম নিজেদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে একটা নতুন সময় এনে দিয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজদের দোয়া কবুল হয় না। সেজন্য বলি, চোরেরা, দুর্নীতিবাজরা কোন বিশ্বাসে নামাজ পড়তে আসে। তার নিজের ফ্ল্যাটের নাম জারি করতে গেলে দশ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছে বলেও জানান আসিফ নজরুল।

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, একজন সাংবাদিক ১৫ হাজার টাকায় ভাড়া থাকতো। পরে ৫০ লাখ টাকা খরচ করে ঢাকা ক্লাবের মেম্বার হয়েছে। অনেকে আমার গরিব পোশাক নিয়ে হাসাহাসি করতো। আমাকে বোকা ভাবতো। দুর্নীতি করার মধ্যে কোনও লজ্জাবোধ ছিল না।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com