খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যেই মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে: ফখরুল

0

খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যেই মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে জানিয়ে ক্ষমতাসীন সরকার বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দিতে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে বন্দী করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘সারাবিশ্বে গণতন্ত্রের জন্য যেসব নেতা লড়াই সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তাদের অন্যতম হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে বেআইনিভাবে দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে।’

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সাথে খালেদা জিয়ার অবদান ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি ১৯৭১ সালে শিশু সন্তানদের নিয়ে এবং সমস্ত ঝুঁকি মাথায় নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। তিনি পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাকে নয় মাস কারাগারে থাকতে হয়েছিল।’

তিনি বলেন, “১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছিল তারাই, যারা বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল হিসেবে দেখতে চায়। তারপর থেকে গণতন্ত্রের পতাকা উড্ডীন করে রেখেছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি গণতন্ত্রের প্রশ্নে কখনো আপস করেননি। তিনি ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় বলেছিলেন, ‘আমি রায়ের পরে কোথায় থাকব জানি না। তবে আপনারা গণতন্ত্রের আন্দোলনে পিছপা হবেন না।”

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যেই মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। আমার প্রশ্ন খালেদা জিয়াকে কেন বন্দী করেছেন? তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বন্দী রাখা হয়েছে। আজ যারা দেশ শাসন করছে তারা দেশকে বিক্রির ষড়যন্ত্র করছে। দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান বাদ যায়নি, সবগুলোকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তারা ভিন্ন আঙ্গিকে একদলীয় শাসন কায়েম করছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র সমান্তরাল। তাকে মুক্ত করা মানেই গণতন্ত্রকে মুক্ত করা। আজকে দেশ নিয়ে যেসব চুক্তি করা হয়েছে তাতে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকিতে। আমি বলব, দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করবেন না। কী এনেছেন ভারত থেকে? পানির কথা তো কোথাও নেই। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি সমস্যার সমাধান হলো না। সীমান্তে হত্যা নিয়ে কথা বলেন না। বিশ্বে কোন বন্ধু দেশ আছে যে তার বর্ডারে বন্ধুকে গুলি করে হত্যা করে। জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন ক্ষমতার জন্য নয়। আমরা দেশের জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য এবং লুটপাট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। আমরা চাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।’

তিনি বলেন, ‘দেশ আজ ভয়াবহ বিপদে পড়েছে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এই আন্দোলন শুধু বিএনপির নয়। দেশের সমগ্র জাতির আন্দোলন। খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে বন্দী করে রাখা হয়েছে। আসুন সবাই মিলে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি।’

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা। তাকে বন্দী রেখে সরকার যতই তৃপ্তি পাক আমরা ক্ষুব্ধ না হয়ে পারি না। জীবনের বিনিময়ে হলেও খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। জেল ও মৃত্যু আমাদের জন্য নির্ধারিত। কিন্তু বাধা অতিক্রম করে লড়াই করব। এই সরকার সব প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত করেছে।’

সেলিমা রহমান বলেন, ‘খালেদা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন। তিনি দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার করে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। তার মতো নেত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দী রেখেছে। তাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করছে। তিনি এখন মৃত্যুশয্যায়। আমি অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে যার যার অবস্থান থেকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’

অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবি তে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম। নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নিপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আব্দুস সালাম আজাদসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com