বিএনপি নেত্রী সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে জামিন পাচ্ছেন না
এই নির্বাচন বাতিল করে নতুন করে ভোটের ব্যবস্থা করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ। শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এই দাবি জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
দুপুর ২টায় সমাবেশের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চ থেকে দলের নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী।
মওদুদ আহমদ বলেন, নির্বাচন কমিশন এ নির্বাচনকে বাতিল ঘোষণা করে নতুন করে আবার নির্বাচনের ব্যবস্থা করুক। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যাতে ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা ভোট দিতে পারেন।
মওদুদ বলেন, সরকারের একদলীয় দুঃশাসন আর সহ্য করতে পারছে না। আজকে বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, বাইরে গেলে তারা জিজ্ঞেস করেন তোমাদের দেশে কি কোনো আইনের শাসন নেই? জামিন হবে না কেন?
আমরা বলি, বিএনপি নেত্রী সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে জামিন পাচ্ছেন না। কিন্তু তারপরেও আমাদেরকে তার জামিনের জন্য আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের আইজীবীরা অনেক পরিশ্রম করেছেন। জামিন হবে কি করে। যেদিন তার জামিনের শুনানি হবে সেদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন বেগম খালেদা জিয়া রাজার হালে আছেন। একথা শোনার পর কোনো বিচারপতির পক্ষে তাকে জামিন দেয়া কি সম্ভব?
এভাবে বিভিন্নভাবে সরকার বেগম জিয়াকে কারাবন্দি অবস্থায় রেখেছেন। এ অবস্থা চিরদিনের অবস্থা নয়। বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিকামী মানুষ। তারা গণতন্ত্রকে ভালোবাসে তারা তাদের অধিকার আদায় করার জন্য আন্দোলন করেছে। এখনও করছে ভবিষ্যতে তারা রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আনবেই। তার মুক্তির সাথে সাথে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তির মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন ফিরে আসবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরে আসবে।
সরকার দেশের মানুষের অধিকার হরণ করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে তার প্রমাণ হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এ নির্বাচনে জনগণের রায়ে তাবিথ আউয়াল, ইশরাক নিবাচিত হলেও মেশিনের কাছে তারা হেরে গেছে।
এতো কিছুর পরও তারা ২৮ শতাংশের বেশি ভোট দেখাতে পারেনি। কারণ দেশের মানুষ সরকার এবং নির্বাচন কমিশন কে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। এটা এদেশের মানুষ আবার প্রমাণ করেছে।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, জনগণ তাদেরকে ভোট দিতে চাননা। তাই দেশের মানুষ নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের অন্য কোনো বিকল্প নেই। যে সরকারের প্রতি মানুষের অনাস্থা রয়েছে এই নির্বাচনের তা তারা জানিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন এ নির্বাচনকে বাতিল ঘোষণা করে নতুন করে আবার নির্বাচনের ব্যবস্থা করুক। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যাতে ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা ভোট দিতে পারেন।
এদেশের মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে সেই পরিবেশ তখনই আসবে যখন দেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। তা না আসা পর্যন্ত এদেশের মানুষ রাস্তায় আন্দোলন এবং তার পাশাপাশি এখানকার জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন আমরা সকলে মিলে করবো।
এই সরকারের পতনের জন্য আপনারাই যথেষ্ট। আমরা নেত্রী ও হণতন্ত্রের মুক্তির জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাব।
সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ন মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন, তাবিথ আওয়াল প্রমুখ।