গাজার কোনো অংশই এখন নিরাপদ না: ডব্লিউএইচও

0

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গড়ে প্রতি ১০ মিনিটে একটি করে শিশু নিহত হচ্ছে।

শনিবার (১১ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, ‘অ্যানেস্থেসিয়া (অবশ করার ওষুধ) ছাড়াই গাজার হাসপাতালগুলোতে অপারেশন করা হচ্ছে। সেখানে প্রতি ১০ মিনিটে একজন করে শিশু মারা যাচ্ছে। গাজার কোনো অংশই এখন নিরাপদ না।’

তিনি আরো বলেন, ‘গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পতনের দ্বারপ্রান্তে। ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজার স্বাস্থ্য অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে ২৫০টিরও বেশি হামলা হয়েছে। আর ইসরায়েলের স্বাস্থ্য অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে ২৫টি হামলা চালানো হয়েছে। এই সংঘাতে আমরা আমাদের শতাধিক সহকর্মীকে হারিয়েছি।’

এর আগে গত ৩০ অক্টোবর দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের ফিলিস্তিনি শাখার কর্মকর্তা জেসন লি গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, প্রতি ১০ মিনিটে একটি করে শিশু মারা যায়।

জেরুসালেম থেকে বিবিসির সাথে কথা বলার সময় তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যে ২০ হাজারের মতো মানুষ আহত হয়েছে তাদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন শিশু।

লি বলেন, জনাকীর্ণ পরিবেশ এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না থাকার কারণে সংক্রামক রোগ বাড়ছে।
তিনি বলেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, গাজায় ট্রাকের মাধ্যমে যে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা ‘সাগরে এক ফোটা পানির মতো।’

তিনিও বলেন, ‘সার্জনরা অ্যানেসথেটিক ছাড়াই অস্ত্রোপচার করছেন, হাসপাতালগুলোতে আলোর উৎস হিসেবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে মানুষ।’

জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল বলেছেন, সংঘাত চলতে থাকায় গাজায় প্রতিদিন ৪২০টির বেশি শিশু মারা যাচ্ছে বা আহত হচ্ছে।

রাসেল বলেন, গাজা উপত্যকার বাইরেও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা পরিচালিত হচ্ছে। পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুসালেমে কমপক্ষে ৩৭টি শিশু নিহত হয়েছে। ইসরাইলের ৩০টির বেশি শিশু নিহত হয়েছে এবং আরো ২০ জন গাজায় আটক হিসেবে আটক রয়েছে যাদের ভাগ্য এখনো অনিশ্চিত।

এদিকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। শুক্রবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। এদের অর্ধেকই শিশু।

উল্লেখ্য, গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে ঘোষণা করে। এর প্রতিরোধে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইল।

এক বিবৃতিতে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ বলেন, গত শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে ইসরাইলে পাঁচ হাজার রকেট বর্ষণের মাধ্যমে ‘অপারেশন আল-আকসা স্ট্রম’ শুরু হয়েছে। এ সময় ইসরাইল গাজা থেকে অনুপ্রবেশের কথা স্বীকার করে।

বস্তুত, ১৯৫৩ সালের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে।
সূত্র : রয়টার্স ও আল-জাজিরা

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com