অর্থের অভাব না থাকা সত্ত্বেও একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে কেউই পোশাক পরেন না!
খাবার এবং বাসস্থানের অভাব থাকলেও লজ্জা নিবারণের জন্য পোশাক বর্তমান সমাজে অকল্পনীয়।।কিন্তু সেই অকল্পনীয় ঘটনাটিই চলে আসছে প্রায় ৯০ বছর ধরে।
বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং অর্থের অভাব না থাকা সত্ত্বেও এই আধুনিক সমাজে একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে কেউই পোশাক পরেন না। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
শুনে আশ্চর্য লাগলেও, বাস্তবে এমনই একটি গ্রাম আছে ব্রিটেনে। ইউরোপের মধ্যে একটি অত্যাধুনিক জায়গায় এমন দৃশ্য অকল্পনীয় বলেই মনে হবে। এক দিন বা দু’দিনের জন্য নয়, গত ৯০ বছর ধরে পোশাক না পরেই কাটাচ্ছেন তারা।
এই গ্রামের লোকেরা কোনো উপজাতি সম্প্রদায়ের নন। আর্থিক অনটনও নেই। কিন্তু তার পরেও বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ সকলেই বিনা পোশাকে থাকেন এই গ্রামে।
গ্রামটির নাম স্পিলপ্লাট্জ। হার্টফোর্ডশায়ারের একটি গ্রাম। এই গ্রামে আধুনিকতার কোনো কিছু বাদ নেই। ক্লাব, পাব থেকে শুরু করে বিনোদনের সব কিছু রয়েছে। গ্রামবাসীরা উচ্চশিক্ষিতও বটে।
ব্রিটেনের অন্যতম প্রাচীন একটি উপনিবেশ এই স্পিলপ্লাট্জ।বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯২৯ সালে এই স্পিলপ্লাট্জের খোঁজ পেয়েছিলেন ইসেল্ট রিচার্ডসন নামে গ্রামবাসীর বাবা। তার পর থেকেই এখানে বসবাস শুরু হয়।
এই গ্রামে বেশির ভাগ পরিবারই বিত্তশালী। বিলাসবহুল বাংলোতে থাকেন। বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। কিন্তু কেউই পোশাক পরেন না। গ্রামের এই অদ্ভুত সংস্কৃতি নিয়ে নানা তথ্যচিত্রও হয়েছে।
এই গ্রামটি পর্যটকদের কাছেও বেশ পরিচিত। দূরদূরান্ত থেকে বহু পর্যটক এখানে আসেন। তাদের ক্ষেত্রেও নিয়মের কোনো ব্যতিক্রম হয় না।
পর্যটকরা যদি ওই গ্রামে থাকেন, তা হলে তাদেরও বিনা পোশাকে থাকতে হবে। না হলে থাকার অনুমতি দেওয়া হয় না। দীর্ঘ দিন ধরে এমনটাই এখানে হয়ে আসছে।
তবে প্রশ্ন উঠতে পারে অত্যধিক ঠান্ডার সময় কী করেন এই গ্রামের লোকেরা? গ্রামের নিয়মে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ঠান্ডায় কেউ যদি পোশাক পরতে চান, তা হলে তিনি পরতেই পারেন। সে ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হবে না।
তবে গ্রামের বাইরে বেরিয়ে শহর বা শহরাঞ্চলে গেলে পোশাক পরে যেতে পারবেন গ্রামবাসীরা। আবার গ্রামে ঢুকলেই পোশাক খুলে ফেলেন তারা। প্রথম প্রথম স্পিলপ্লাট্জের এই সংস্কৃতির বিরোধিতা করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু এখন তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অতীত থেকে এই নিয়মই এখানে পালিত হয়ে আসছে। এখনও যা বদলায়নি। পরম্পরার প্রতি আনুগত্যই এমন প্রথা চালানোর নেপথ্যে অন্যতম কারণ বলে মনে করেন অনেকে।