খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএসএমএমইউ’র মিথ্যাচার — রুহুল কবির রিজভী
অন্যায় কারাবন্দি নিরাপরাধ গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) যে বিবৃতি দিয়েছে সেটাকে মনগড়া ও পরিকল্পিত মিথ্যাচার বলে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি।
অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে নি:শর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দাবি জানিয়েছে সোমবার, জানুয়ারি ২৭, ২০২০, দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে হত্যার আয়োজন সম্পন্ন করেছেন সরকার। তাকে দেখে এসে তার স্বজনরা কান্নাভেজা কণ্ঠে জানিয়েছেন, দিন দিন অবস্থার আরো অবনতি হচ্ছে। সারাক্ষণ বমি করছেন। তার গায়ে প্রচণ্ড জ্বর। সারাক্ষণ তীব্র ব্যথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। বাম হাত সম্পূর্ণ বেঁকে গেছে। পিজি হাসপাতালে নামকাওয়াস্তে যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। তার যে ভয়াবহ অবস্থা, দ্রুত উন্নত চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে। তার শরীর খুবই খারাপ। শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে বেগম খালেদা জিয়া কথা বলতে পারছেন না। সেখানে ভর্তির পর এখনো তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না, কিছু খেতে পারছেন না, হাত পা নাড়াতে পারছেন না। তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না।’
তিনি বলেন,‘যথাযথ চিকিৎসার অভাবে তার শারীরিক অসুস্থতা গভীর সংকটাপন্ন। অথচ বিএসএমএমইউ হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ডও তার অসুস্থতা যে দেশে নিরাময়যোগ্য নয় সেটি উল্লেখ করলেও আদালত তাকে জামিন দেয়নি। ন্যায়বিচারহীনতার এই বিপজ্জনক ছবি পৃথিবীতে বিরল।’
রিজভী বলেন, ‘বিএসএমএমইউর পরিচালক অসুস্থতা নিয়ে এক সংবাদ বিবৃতি দিয়েছেন। এই বিবৃতি মূলত: শেখ হাসিনারই ফরমান।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, ‘বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে সরকারি চাপের মুখে গণমাধ্যমে সব সংবাদ প্রকাশিত না হলেও বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমে আসল ঘটনা প্রকাশিত হচ্ছে। সম্প্রতি সুইডেনের সংবাদ মাধ্যম নেত্র নিউজে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাবন্দি বিএনপি নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া “পঙ্গু অবস্থায়” আছেন এবং দৈনন্দিন কাজের জন্য তিনি অপরের সাহায্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগকে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে এই তথ্য দিয়েছে তার চিকিৎসার জন্য গঠিত বিএসএমএমইউ হাসপাতালের একটি মেডিক্যাল বোর্ড। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে বিএসএমএমইউর ভাইস চ্যান্সেলরের স্বাক্ষরিত একটি চিঠির সাথে মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টটি পাঠানো হয় ২০১৯ সালের ১১ই ডিসেম্বর। পরদিন, অর্থাৎ ১২ই ডিসেম্বর, আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার এই ভয়াবহ পঙ্গু অবস্থার প্রতিবেদন পাওয়া সত্ত্বেও জামিনের আবেদন বাতিল করে দেয় সরকারের সর্বোচ্চ মহলের হস্তক্ষেপে। নেত্র নিউজ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টটির একটি রিডাক্টেড কপিও (স্পর্শকাতর অংশ ঢেকে দেওয়া হয়েছে এমন) প্রকাশ করে।
আমরা সরকারকে বলবো- আজই বেগম জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত হাসপাতালে তার চিকিৎসার সুযোগ প্রদান করা হোক। তাকে বেঁচে থাকার সুযোগ দিন।’