বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত: বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করা হলো না দিবুর
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত তিনজনের মধ্যে সুদর্শন কুমার দেব দিবু নামের ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীও রয়েছে। তার আজ দ্বিতীয় সাময়িকের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। স্কুলের যাওয়ার আগে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দিবু ভৈরব আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থী। তার বাবার নাম জনি লাল হরিজন। তিনি পেশায় একজন রেলওয়ে কর্মচারী।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুরে স্কুলে যাওয়ার সময় বাকি থাকায় বাড়ির সামনে সবার সঙ্গে খেলা করছিল দিবু। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল্লাহ মিয়া সড়কের পাশে থাকা সৌর বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে সহযোগিতা করতে দিবুসহ ৬-৭ জনকে ডেকে নিয়ে যান। খুঁটি সরিয়ে নেওয়ার সময় বিদ্যুতের মেইন তারে খুঁটির স্পর্শ লাগে। এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ঘটনাস্থলেই মারা যায় দিবু। এ সময় আরও দুজন নিহত হন।
বিলাপ করতে করতে দিবুর মা রিতা রানী হরিজন বলেন, আমার ছেলের স্কুলে দ্বিতীয় সাময়িকের পরীক্ষা চলছিল। দুপুর ১টার দিকে স্কুলের পরীক্ষায় তার অংশ নেওয়ার কথা ছিল। স্কুলের যাওয়ার সময় বাকি থাকায় সে যখন ঘর থেকে বের হয় তখন আমি তাকে বলেছি, কোথায় যাস। সে বললো, ‘মা, ১টাতো বাজেনি। ১টা বাজলেই পরীক্ষা দিতে স্কুলে চলে যাবো। তুমি চিন্তা কইরো না’। এই বলে সে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘দিবু আমার বড় ছেলে। তাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। সে পড়াশোনা করে অনেক বড় হবে। নিজের মেধা দিয়ে ভালো একটা চাকরি করবে। সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না।’
দিবুর বাবা জনি লাল হরিজন বলেন, ‘আমার বড় ছেলে পড়াশোনায় খুব ভালো ছিলো। সেজন্য ভৈরবের ভালো একটি স্কুলে ভর্তি করায় যেন সে ভালো ভাবে পড়াশোনা করে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। এখনতো আমাদের সব স্বপ্ন শেষ। কে পূরণ করবে আমাদের স্বপ্ন?’