শেহবাজ শরীফের অনুমতি পেলে গ্রেফতার হতে পারেন ইমরান
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের লিখিত অনুমতি চেয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অনুমতি পেলে ইমরানকে গ্রেপ্তারের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
অন্যদিকে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের বিরোধিতা করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) অন্যতম প্রধান নেতা আসিফ আলী জারদারি। পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম বড় অংশীদার পিপিপি। সোমবার (২২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
এদিকে ইমরান খানের সম্ভাব্য গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের রাস্তায় নামতে বলেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতারা। তবে রোববার রাত থেকেই ইসলামাবাদে ইমরানের বাড়ি যে এলাকায় সেই বানিগালার চারপাশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পুলিশ কমান্ডো, রেঞ্জার্স এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিশাল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
এছাড়া কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বাসভবনের দিকে যাওয়ার সকল রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির রাজনীতিতে ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। অবশ্য ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হবে নাকি গৃহবন্দী করা হবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বেশ কয়েকটি সূত্র দ্য নিউজকে জানিয়েছে।
ওই সূত্রগুলো জানিয়েছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু ইমরানকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে সবুজ সংকেতের জন্য অপেক্ষা করছে পুলিশ।
তবে ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, ‘ইমরান খানের সাথে আলোচনা চলছে, কারণ পিটিআই প্রধান গ্রেপ্তার বা গৃহবন্দী হওয়া এড়াতে চান। মূলত গ্রেপ্তারের মতো পরিস্থিতি এড়াতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুবিধা চেয়েছেন ইমরান খান। তবে সেটির জন্য তাকে প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে।’
এছাড়া পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী মোবাইল ফোনের মধ্যেমে দলের নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ রাখছেন এবং তাকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে করণীয় বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। পিটিআই কর্মীরা ইমরানের বানিগালার বাসভবনের চারপাশে জড়ো হচ্ছেন, তবে এখনও পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কার্যালয় থেকে লিখিত অনুমতি চেয়েছে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন জোটের সব দলের ঐক্যমতে ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে সূত্র জানায়।
এদিকে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের বিরোধিতা করেছেন পিপিপির প্রধান নেতা ও পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের ফলে ক্ষমতাসীন জোটের রাজনৈতিক ক্ষতি হবে বলে মনে করেন তিনি।
অন্যদিকে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের বিষয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করেননি পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান। তবে পিটিআই নেতা মুরাদ সাইদ রোববার রাতেই দাবি করেন, ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এর আগে বিচারক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ইমরান খানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। ইসলামাবাদের মারগাল্লা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের সাত নম্বর ধারায় ওই এফআইআর দায়ের করে পুলিশ।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ফেডারেল রাজধানী ইসলামাবাদের অতিরিক্ত দায়রা জজ জেবা চৌধুরীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ইসলামাবাদ সদর ম্যাজিস্ট্রেট আলী জাভেদের অভিযোগে পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের মামলা দায়ের করা হয়।
ইমরানের বিরুদ্ধে ঘৃণাত্মক বক্তৃতা এবং সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ উসকে দেওয়ার জন্য একজন বাসিন্দার কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এফআইআরটি দায়ের করা হয়।