পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র আলেকজান্ডার দাগিনের মেয়ে মস্কোতে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে নিহত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘মস্তিষ্ক’ হিসেবে পরিচিত কট্টর রুশপন্থী ঘনিষ্ঠ মিত্র আলেকজান্ডার দাগিনের মেয়ে রাজধানী মস্কোতে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। রোববার মস্কোর উপকণ্ঠে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে তিনি মারা যান বলে রুশ কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে রাশিয়ার গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসী সামরিক অভিযানের কট্টর সমর্থক আলেকজান্ডার দাগিন ছিলেন গাড়িবোমা বিস্ফোরণের প্রধান লক্ষ্যবস্তু। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে তার মেয়ে দারিয়া দাগিনা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় বেঁচে যান দাগিন।
এক বিবৃতিতে রাশিয়ার তদন্ত কমিটি বলেছে, ১৯৯২ সালে জন্ম নেওয়া দারিয়া দাগিনা মস্কো থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের বলশি ভিজিওমি গ্রামের কাছের একটি হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় তার টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজারে রাখা বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিটি।
দারিয়ার বাবা ৬০ বছর বয়সী আলেকজান্ডার দাগিন একজন দার্শনিক। দেশটিতে তিনি ভ্লাদিমির পুতিনের ‘মস্তিষ্ক’ নামে পরিচিত। রাশিয়ান উগ্র জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক তাত্ত্বিক হিসেবেও পরিচিত তিনি।
রুশ-ভাষী অঞ্চলগুলোকে একত্রীকরণের মাধ্যমে নতুন বৃহৎ রুশ সাম্রাজ্য গড়ে তোলার পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে নিজের মতামত জানিয়ে আসছেন আলেকজান্ডার। যে কারণে ইউক্রেনে মস্কোর সামরিক অভিযানে দৃঢ় সমর্থন জানান তিনি।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখলে নেওয়ার পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন দাগিন। ক্রিমিয়া দখলে নেওয়ার পদক্ষেপেরও সমর্থক ছিলেন তিনি।
মস্কোর কাছে বিস্ফোরণের জন্য ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল ডিএনআরের প্রধান ডেনিস পুশিলিন কিয়েভ কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন। টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, ইউক্রেনীয় ক্ষমতাসীনদের সন্ত্রাসীরা আলেকজান্ডার দাগিনকে হত্যা করেছে।
টেলিগ্রামে পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিস্ফোরণের পর একটি গাড়ির ধ্বংসাবশেষ জ্বলছে। এমন সময় জরুরি সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। আর দাগিন হতবাক হয়ে এই দৃশ্য দেখছেন।
তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বিস্ফোরণের স্থলের এই ভিডিও ফুটেজ নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে। তদন্তকারীরা দারিয়া দাগিনা ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
তারা বলেছেন, গাড়ির চালকের আসনের নিচে একটি বিস্ফোরক ডিভাইস লাগানো ছিল। গাড়িতে আগুন ধরার আগেই সেটি বিস্ফোরিত হয়ে যায়। এই ঘটনা ফরেনসিক ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা তদন্ত করছেন।
সূত্র: এএফপি, বিবিসি।