দুর্নীতি মামলায় ১৪ দিন পর আদালতে তোলা হলো পার্থ-অর্পিতাকে
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গত ২৩ জুলাই গ্রেফতার করেছিল পশ্চিমবঙ্গের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও বরখাস্ত শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। ১৪ দিন পর আবার তাদের আদালতে তোলা হয়েছে।
৫ আগস্ট ইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত ও জেলে গিয়ে ইডিকে জেরা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক জীবনকুমার সাধু। বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সকালে তাদের জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, তদন্তের স্বার্থে আবারও জেল হেফাজতের আবেদন করা হবে। অপরদিকে, পার্থ-অর্পিতার নামে যে বিপুল সম্পদের হদিস পাওয়া গেছে, সেগুলির উৎসের সন্ধানে নামতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে মনে করছে ইডি। তবে বিচারক জীবনকুমার সাধুর এজলাস কী রায় দেয় সেদিকেই তাকিয়ে আছে সবাই।
রাজ্যের সাবেক এই মন্ত্রী তথা তৃণমূল দলের অপসারিত মহাসচিবকে রাখা হয়েছে কলকাতার আলিপুর জেলে এবং মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ অর্পিতাকে রাখা হয়েছে আলিপুর নারী সংশোধনাগারে। সেখানে তাদের আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির কর্মকর্তারা।
এদিন পুলিশ ভ্যানে করে প্রথমে অর্পিতাকে আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। তার কিছু সময় পরে একটি সাদা সুমো গাড়িতে করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। অর্পিতাকে প্রকাশ্যে কোর্ট লকাপে নিয়ে গেলেও পার্থকে আদালতের মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করিয়ে পেছন দিক থেকে কোর্ট লকাপে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশের গাড়ি থেকে নামানোর সময় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ‘অর্পিতা আপনাকে কি ফাঁসানো হচ্ছে?’ এমন প্রশ্ন করলেও এদিন মুখ খোলেননি তিনি। মাথায় ওড়না জড়িয়ে, মুখে মাস্ক পরে দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে যান তিনি। তবে এর আগে অর্পিতা প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তার ফ্ল্যাট থেকে ইডির বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পদ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতেন না। ওই রুমে নাকি তার প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
প্রসঙ্গত, অর্পিতার উত্তর ২৪ বেলঘরিয়া এবং কলকাতার ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাট থেকে ৫৫ কোটি ৪৩ লাখ রুপি, ছয় কেজি স্বর্ণের গহনা ও বারসহ প্রচুর সম্পত্তির দলিল উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর থেকে প্রকাশ্যে আসে একের পর এক সম্পত্তির খবর। বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি, গাড়ির যে তালিকা এখনও পর্যন্ত উঠে এসেছে, তার বাজারমূল্য কয়েকশ কোটি রুপির কম নয় বলে ইডির ধারণা। পাওয়া গেছে একাধিক ভুয়া কোম্পানির খোঁজ।