গাইবান্ধায় কমছে বন্যার পানি, নদীতে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি
গাইবান্ধার সবকটির নদনদীর পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে নিম্নাঞ্চলগুলো এখনো পানির নিচে ডুবে আছে। নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্নে দুর্ভোগ বাড়ছে।
এদিকে ভাঙনে দিশেহারা নদী তীরবর্তী মানুষ। এরই মধ্যে ফুলছড়ির পূর্ব পাশে চর পেপুলিয়া বগির চর, রতনপুর, বানিয়াপাড়া, দেলুয়াবাড়ি, তালতলার পূর্ব পাশে ১৪ নম্বর গ্রাম এবং খাটিয়ামারিসহ কয়েকটি চরের ঘরবাড়ি ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। এসব এলাকার কয়েকশ পরিবার ভিটামাটি হারিয়ে রাস্তায় বা বাঁধে অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।
ফুলছড়ি উপজেলার উরিয়া ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের বানিয়াপাড়ার রিকশাচালক আয়নাল মিয়া (৬৫) বলেন, ‘এরআগে তিনবার ভাঙনের শিকার হয়েছি। এবার ভাঙনে বাড়িঘর কিছুই পাইনি। গাছপালা সব নদীতে বিলীন হয়েছে। পানি পান করারও কোনো ব্যবস্থা নাই। এখন বাঁধের ওপর যাচ্ছি। কোথাও আশ্রয় নাই। কোনো কর্মের ব্যবস্থা নাই। এক বেলা খাই, অন্য বেলা না খেয়ে থাকতে হচ্ছে।’
একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৪৪) বলেন, ‘ভুসির ভিটা থেকে হাজিরহাট পর্যন্ত রতনপুর গ্রামের শতাধিক পরিবার নদীতে বিলীন হয়েছে। চোখের সামনে নিজ ভিটামাটি ভেঙে যাচ্ছে নদীতে। কিছুই করতে পারছি না। যা ছিল তা নৌকা করে বাঁধে আশ্রয় নিতে হচ্ছে।’
ওই গ্রামের মাজেদা বেগম (৬০) বলেন, ‘দুটি ঘরের একটি গেছে নদীতে। বাধ্য হয়ে পরিবার নিয়ে বাঁধে অবস্থান করছি। সবশেষ, কিছুই আর রইল না।’
উড়িয়া ইউনিয়নের আব্দুল মজিদ বলেন, ‘নদীতে ভিটামাটি ভেঙে গেছে। তাই ঘর খুলে নৌকায় নিয়ে বাঁধে আসছি। উঁচু জায়গায় যাবো। দিনমজুরের কাজ করে ঘরবাড়ি করেছি। সেই ঘরবাড়ি নদীতে ভেঙে গেলো। ঘরের ভেতরে অনেক আসবাবপত্র ছিল, কিছু নিয়েছি, কিছু নিতে পারিনি।’