রাশেদ খান মেননের সম্পদ
রাশেদ খান মেনন (জন্মঃ ১৮ মে, ১৯৪৩) বাংলাদেশের একজন উগ্র বামপন্থী কমিউনিস্ট। কোন চাকুরী করেন না। দেশি বিদেশী এজেন্ট হয়ে আজীবন কাজ করে যাচ্ছেন। বামপন্থী কমিউনিস্ট নামধারী মেনন ৩ মন্ত্রণালয়ের লুটপাট ও একটি মন্ত্রণালয়ের একতরফা ডাকাতির সাথে সরাসরি জড়িত। ক্যাসিনো ও জুয়ার বাণিজ্যে আড়ালেই থেকে মাসিক কোটি টাকা অবৈধ আয় করেন।
১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নির্বাচিত সভাপতি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী বিনাভোটে নির্বাচনে গঠিত মন্ত্রী সভায় ডাক ও তার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন এর পর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ১২-০১-২০১ থেকে ০৩-০১-২০১৮ সালে থাকাকালীন সময়ে পরিবহন ও পর্যটন থেকে ১৩৮ টি টেন্ডার বাজির মাধ্যমে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন।
২০০৮ নির্বাচনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি থাকালীন সময়ে রাজধানীর কয়েকটি স্কুল কলেজের নিয়োগ , কমিটি নির্বাচনে ব্যাপক আকারের দুর্নীতি শুরু করেন। কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় তার লাগামহীন দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হয়।
ক্যাসিনো ও জুয়ার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযানটি চালানো হয় ফকিরাপুরের ইয়ংমেনস ক্লাবে। ক্লাবটির চেয়ারম্যান স্থানীয় সাংসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালায় র্যাব। সেখানে ক্লাবে ক্যাসিনো চালানো হতো। ওই দিন অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারসহ ১৪২ জনকে আটক করে র্যাব। এই ক্লাবের সভাপতি ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া।ফকিরাপুরের ইয়ংমেনস ক্লাব থেকে ক্যাসিনো ও জুয়ার টাকার একটা অংশ মাসিক ভিত্তিক রাশেদ খান মেনন কে দেয়া হতো।
উল্লেখ্য, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ঢাকার ইয়াংমেনস ক্লাবের চেয়ারম্যান। এই ক্লাবের মালিক যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়্যা। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে খালেদ ক্যাসিনো থেকে মেননের টাকা নেয়ার তথ্য দিয়েছেন। খালেদের গুরু বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটও মেননের নাম বলেছেন।
বাজেটে ঘুষ, দুর্নীতি, ঋণখেলাপি ও ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের সাথে রাশেদ খান মেনন জড়িত। ০৩/০১/২০১৮ থেকে ০৭/০১/২০১৯ পর্যন্ত সমাজকল্যাণমন্ত্রী থাকালীন সময়ে উক্ত মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় ১৯০ কোটি টাকা অবৈধ উপায়ে লুট করেন।লুটের টাকার ভাগাভাগি করেন আওয়মীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের সাথে।
পল্টিবাজি কথার পেছেনে রয়েছে ক্ষমতা ও টাকা ভাগাভাগি।
১৯ অক্টোবর বরিশালের অশ্বিনীকুমার টাউন হলে ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলা শাখার সম্মেলনে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। এর বড় সাক্ষী আমি নিজেই। আজ মানুষ তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত।’
এই বক্তব্যের পরেই আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের সাথে গোপন বৈঠকে টাকা ভাগাভাগি, বাজেটে ঘুষ, দুর্নীতি, ঋণখেলাপি ও ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের বিষয়গুলো নিয়ে ভয় দেখানোর পর ২০১৯ সালের বুধবার (২৩ অক্টোবর) দোহারে ঢাকা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা অনির্বাচিত এমপি বলেছেন, পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন-এর একটি বক্তব্য নিয়ে যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিলো, তার অবসান হয়েছে। এখন ১৪ দলের মধ্যে কোন বিরোধী নেই।(৩০ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখে প্রকাশিত খবর )
নবম ও দশম নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী তার ব্যবসা থেকে আয় বেড়েছিল দ্বিগুণ এবং পত্রিকায় কলাম লেখা বাবদ আয় বেড়ে হয়েছিল প্রায় সাতগুণ। এরমধ্যে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী তিনি ব্যবসা থেকে আয় করতেন ৩ লাখ টাকা এবং পত্রিকায় কলাম লিখে আয় করতেন ২৫ হাজার ৭২৪ টাকা। আর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী ব্যবসা থেকে তার আয় ৬ লাখ টাকা এবং পত্রিকায় কলাম লিখে তার আয় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী তিনি ব্যবসা থেকে আর আয় করেন না।
হাতে নগদ টাকার পরিমাণও বেড়েছে রাশেদ খান মেনন ও তার স্ত্রীর।বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এর স্ত্রীর ১০ বছরে সম্পদ বেড়েছে ২২ গুনেরও বেশি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দাখিল করা হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী মেননের স্ত্রীর নামে একটি বাড়ি রয়েছে। যার মূল্য ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮০ হাজার ২৪০ টাকা দেখানো হয়েছে।
একই সঙ্গে রাশেদ খান মেননের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ২২ গুণ। অর্থাৎ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা আর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তা ৫৬ লাখ ৬২ হাজার ৪৩০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৩০ টাকা।
অপরদিকে, স্থাবর সম্পত্তির দিক থেকে গত ১০ বছরে তার স্ত্রী হয়েছেন কোটিপতি।
নবম ও দশম নির্বাচনী হলফনামায় তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি না থাকলে ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮০ হাজার ২৪০ টাকা।
এরশাদ আমলে এরশাদের কাছ থেকে মাসিক প্রায় ৩ লক্ষ টাকা করে দালালি খরচ নিতেন মেনন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, রাজনীতি করতে হলে সুযোগ বুঝে অনেক কিছু করতে হয় (২১ অক্টোবর, ২০১৯ প্রকাশিত খবর )
পার্বত্য চট্টগ্রামের কাদিয়ানিদের পক্ষ নিয়ে কাজের এজেন্ডায় যারা বিদেশী এজেন্ট হয়ে কাজ করছে তাদের মধ্যে রাশেদ খান মেনন অন্যতম।
যশোর অফিস – ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ তারিখের প্রায় সকল দৈনিক পত্রিকার খবরে বলা হয় , বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, দেশের উন্নয়নের নেপথ্যে রয়েছে শ্রমজীবী মানুষ। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের হিসেবে ২০১৫ সালে বিদেশি বাণিজ্যের নামে ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর আমি হিসাব দিচ্ছি গত ১০ বছরে ৯ লাখ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। নতুন ২২ পরিবারের হাতে সব সম্পদ। এই নতুন দুর্নীতিবাজ ও রাজাকারদের প্রতিহত করতে হবে।
অথচ নিজেই পাচার করেছেন কয়েকহাজার কোটি টাকা। ঘুষ, বাজেটে ঘুষ, দুর্নীতি, ক্যাসিনো জুয়া , ঋণখেলাপি ও ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের বিষয়ে মুখে তালা।