বর্তমান বাংলাদেশ ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র’ অর্জিত স্বাধীনতা থেকে সরে গেছে: দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এমন কোনো দুর্ঘটনার দিকে ঠেলে দেবেন না যেটা আমাদের জন্য, দেশের জন্য, বিশ্বের গণমানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী জনতা দলের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি গণতন্ত্র’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
দুদু বলেন, আমরা যে আন্দোলন করছি, খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করছি। অনশন, মানববন্ধন, বিক্ষোভ করছি এটা কিন্তু সরকার উৎখাতের জন্য নয়। কিন্তু সরকারকে হুঁশিয়ার করছি খালেদা জিয়াকে এমন কোনো দুর্ঘটনার দিকে ঠেলে দেওয়া ঠিক হবে না বলে। যেটা আমাদের জন্য, দেশের জন্য, বিশ্বের গণমানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়। খালেদা জিয়া এমন কোনো অন্যায় করেননি যে কারণে তাকে জেলে রাখা যায়।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান ও অতীতের বাংলাদেশের মধ্যে আকাশপাতাল পার্থক্য। এ বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র অর্জিত স্বাধীনতা থেকে সরে গেছে। এ রাষ্ট্রে কারও কোনো নিরাপত্তা নেই। এখানে আইনের শাসন, গণতন্ত্র, নিরাপত্তা, স্বাধীনতা নেই। যে রাষ্ট্রের জন্য ৫০ বছর আগে এক সাগর রক্ত দিয়েছে এ দেশের মানুষ। বর্তমান সময়ের তরুণ-তরুণী যে স্বপ্ন দেখে সেই স্বপ্নের জন্য তার পূর্বপুরুষেরা লড়াই করেছে এবং এ দেশকে মুক্ত করেছে। সেই রাষ্ট্রে আজ নির্বাচনের ব্যবস্থা নেই, গণতন্ত্র নেই।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্র ও বাংলাদেশ— একটার সঙ্গে আরেকটা সম্পৃক্ত। বেগম জিয়ার খারাপ কিছু হলে সেটা সিরাজউদ্দৌলা, নেপোলিয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে। সেটা বিশ্বের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে হবে।
শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি প্রধানমন্ত্রী, আর খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী। আপনি তাকে দেখতে যেতে পারেন, একটা টেলিফোনও করতে পারেন। খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, লন্ডন বা যেকোনো দেশে পাঠানোর উদ্যোগ নিতে পারেন। তাহলে দেখবেন আপনার অতীতের যতগুলো খারাপ কাজ এ একটা কাজের মধ্যদিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারবেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা যদি খালেদা জিয়াকে রক্ষা করতে না পারি, ঐক্যবদ্ধভাবে একটি সাড়া জাগানো পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারি, তাকে (বেগম খালেদা জিয়াকে) যদি কোনো কারণে হারাই তাহলে যে শূন্যতা তৈরি হবে, তা পূরণ হওয়ার নয়। তাই দল যেটা বলবে, ধৈর্যের সঙ্গে, কখনো কোনো জায়গায় অধৈর্য হওয়া যাবে না। আগেও যেটা করেছেন জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়ার সময় এখন তারেক রহমান সংগঠন পরিচালনা করছেন তিনি যেটা বলবেন কোনো বিতর্ক ছাড়াই সেটা পালন করবেন।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. রায়হানুল ইসলাম রাজুর সভাপতিত্বে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকসুর সাবেক এজিএস নাজিম উদ্দিন আলম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, জিনাত সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।