চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নাম পরিবর্তন করে শহিদ ওয়াসিম উদ্দিনের নামে করা হয়েছে!

0

চট্টগ্রাম মহানগরের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নাম পরিবর্তন করে শহিদ ওয়াসিম উদ্দিনের নামে করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রামে প্রথম শহিদ হন চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ওয়াসিম উদ্দিন।

শুক্রবার সকালে নাম পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান।

তিনি বলেন, বুধবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তনের এ সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নিশ্চিত হয়ে এক্সপ্রেসওয়ের নাম পরিবর্তন করে।

এছাড়া এক্সপ্রেসওয়েতে আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়ি চলাচলে শুক্রবার সকাল থেকে টোল আদায় শুরু হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্তবিষয়ক উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে টোল আদায় কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

এর আগে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর টোল নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। যদিও পরে তা স্থগিত করা হয় বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

তিনি আরও জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্ধারণ করা টোলের হার পরিবর্তন করে গত বছরের ৩ নভেম্বর নতুন প্রস্তাব পাঠায় সিডিএ। ২৭ নভেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় টোলের হার চূড়ান্ত করে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ১০ ধরনের গাড়ি চলাচলের সুযোগ রেখে টোলের হার চূড়ান্ত করা হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল এবং ট্রেইলার ওঠা-নামার সুযোগ রাখা হয়নি।

চূড়ান্ত হওয়া টোলের হার অনুযায়ী, সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে টোল দিতে হবে ৩০ টাকা। কার জাতীয় গাড়িকে দিতে হবে ৮০ টাকা। জিপ ও মাইক্রোবাসের জন্য টোলের হার ১০০ টাকা। পিকআপ থেকে নেওয়া হবে ১৫০ টাকা। মিনিবাস ও ট্রাক (চার চাকা) থেকে ২০০ টাকা করে এবং বাস থেকে ২৮০ টাকা নেওয়া হবে। ট্রাকের (৬ চাকা) জন্য ৩০০ টাকা এবং কাভার্ড ভ্যানের জন্য ৪৫০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে টোল আদায়ের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখন থেকে এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে টাকা দিতে হবে। নগরের পতেঙ্গা প্রান্তে টোল আদায় করা হবে। এখন সিডিএ টোল আদায় করবে। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হবে।

তিনি বলেন, ২০১৭ সালে অনুমোদন হওয়া এই প্রকল্পের কাজ সাড়ে সাত বছরেও পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি সিডিএ। এখন পর্যন্ত শুধু এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল অংশের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ওঠানামার জন্য ১৫টি র্যাম্প নির্মাণ করার কথা। তবে সরকার পরিবর্তনের পর ছয়টি র্যাম্প বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৯টির মধ্যে ১টির কাজ শেষ হয়েছে, অন্য ৮টির কাজ চলমান রয়েছে। এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে নামে এই এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেছিলেন। তখন চট্টগ্রাম মহানগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত নির্মিত এক্সপ্রেসওয়ের নামকরণ করা হয়েছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তিনবারের মেয়র ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাবা প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে।

উদ্বোধন হলেও তখন গাড়ি চলাচল শুরু হয়নি। গত বছরের আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে পরীক্ষামূলকভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হলেও কোন গাড়ি থেকে টোল আদায় করা হয়নি। এর মধ্যে গত বছরের ১৬ জুলাই বিকেলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে নগরীর মুরাদপুরে নিহত চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ ওয়াসিম আকরামের নামে এই এক্সপ্রেসওয়ের নামকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com