আওয়ামী ইউপি সদস্যকে ঘুষ দিয়েও মেলেনি সরকারি ঘর, অভিযোগ করায় প্রাণনাশের হুমকি
সরকারি ঘর পেতে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে ঘুষ দিয়ে ছিলেন ১০ হাজার টাকা। তাও মেলেনি ঘর। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করায় উল্টা প্রাণনাশের হুমকির শিকার হতে হচ্ছে ওই নারীকে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী বিধবা ওই নারী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। নাটোরের সিংড়া উপজেলার গুনাইখাড়া ভাটোপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অন্যের বাসাবাড়িতে কাজ করে দু’মুঠো খাবারের পাশাপাশি পারিশ্রমিক হিসেবে পাওয়া সামান্য টাকায় সংসার চলে ওই গ্রামের ভূমিহীন ফুল বিবির। ২০ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। বিধবা ফুল বিবিকে সরকার নতুন ঘর দেবে। এমন আশ্বাসে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো: মেহের আলীকে তার দাবি অনুযায়ী ১০ হাজার টাকা দেন। ১১ মাস আগে টাকা নেয়ার পর ওই ইউপি সদস্য এখন নানা তালবাহানা করছেন।
এ বিষয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ফুল বিবি। কিন্তু অভিযোগ করে উল্টা বিপাকে পড়েছেন তিনি। গোপনে টাকা দিয়ে মীমাংসা ও অভিযোগ তুলে নিতে প্রতিনিয়তই তাকে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত একটানা চার ঘণ্টা ওই ভূমিহীন বৃদ্ধা নারীকে ভূমি অফিসে ডেকে বসিয়ে রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: রকিবুল হাসান। পরে বিষয়টি নিয়ে কোনো সুরহা না পেয়ে নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সিংড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ভুক্তভোগী ফুল বিবি।
ফুল বিবি বলেন, ‘বাবা সরকারি ঘর পেতে মেম্বরকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। এখনিআমার কষ্টের টাকাটা স্যারের সামনে ফেরত দিক। কিন্তু মেম্বর গোপনে টাকাটা ফেরত দিতে গেছে। না নেয়ায় এখন রাস্তা-ঘাটে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে।’
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মো: মেহের আলী বলেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। কাউকে হুমকিও দেননি তিনি।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম জিডি দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, তার দফতরে ইউপি সদস্য মেহের আলীর বিরুদ্ধে একজন ভূমিহীন নারী একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাছাড়া এখন ওই নারীকে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে মৌখিকভাবে বিষয়টি শুনেছি। বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।