খালেদা জিয়া এখনও অসংখ্য মিথ্যাচার-নিপীড়ন সহ্য করেও সংগ্রাম করছেন: রিজভী

0

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী করোনার ভ্যাকসিন আগে নিলে ‘অসুবিধা কোথায়’, এমন প্রশ্ন রেখে ‘ভ্যাকসিন নিয়ে সরকার জনগণের সাথে তামাশা শুরু করেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, ‘ভারতে ভ্যাকসিন দিয়ে অনেকে মারা গেছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে। এজন্য আমরা বলেছিলাম, ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা প্রমাণের জন্য ক্ষমতাসীনদের আগে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা উচিত। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সবার আগে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন এবং ডাক্তার পাউসিও আগে নিয়েছিলেন। তাতে করে ভ্যাকসিনের প্রতি মার্কিনিদের আস্থা ফিরেছে, ভীতি দূর হয়েছে। সুতরাং আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন আগে নিলে অসুবিধা কোথায়? তাঁরা আগে ভ্যাকসিন নিলে এই ভ্যাকসিনের ওপর জনগণের আস্থা বাড়বে।’

গতকাল রবিবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, ‘হাছান মাহমুদ মিথ্যার যন্ত্রে পরিণত হয়ে গিয়েছেন। মিথ্যার যন্ত্রে পরিণত হয়ে বলছেন, বিএনপিকে এ ভ্যাকসিন আগে দেবেন। তাদের উদ্দেশ্য হলো, বিএনপিকে নিধন করা। খুন, গুম দিয়ে বিএনপিকে নিধন করার চেষ্টা করেছিল। এখন ভ্যাকসিনের নিরাপত্তার জন্য বিএনপিকে আগে দিয়ে নিধন করার চেষ্টা করছে। এ সরকার মানুষের মরা-বাঁচা নিয়েও তিরস্কার শুরু করেছে।’

আরাফাত রহমান কোকোর স্মৃতিস্মারণ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকো রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন না। তবে রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান ছিলেন। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এদেশের কোটি কোটি মানুষের সমাদৃত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার ঘিরে রেখেছে গুলশান অফিসে।’

বেগম জিয়ার গৃহবন্দিত্বের দিনগুলোর প্রতি আলোকপাত করে রিজভী বলেন, ‘তখন হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের উদ্যোগে মাঝে মাঝে ঝটিকা মিছিল দেখতাম। সারা দেশের নেতাকর্মীরা রাস্তায় অবরোধ তৈরি করেছিল। সেই মুহূর্তে একজন মা সরকারের নিপীড়ন-অত্যাচারের শিকার। গোলমরিচ যাঁর চোখে, সে যদি তার কনিষ্ঠপুত্রের মৃত্যুসংবাদ শুনে তখন সেই মায়ের কী অবস্থা হতে পারে? সেই বেদনা কি সইবার মতো? সেই বেদনা ছিল হিমালয় পর্বতের মত ভারি। সেই সময় জনগণ তা উপলব্ধি করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ যখন ঢাকায় আনা হয়েছিল, তখন সারা দেশে একদিকে গুম-খুন, অত্যাচার-নিপীড়ন আর অন্যদিকে কোকোর জানাজায় মানুষের ঢল নেমেছিল। এত অত্যাচার-নির্যাতনের মাঝেও মানুষের ঢল দেখে সেদিনই শেখ হাসিনা বার্তা পেয়ে গিয়েছিলেন। আর সেদিন থেকেই বিএনপির ওপর অত্যাচার আরও বহুমাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল। সেদিন থেকেই শেখ হাসিনা আরও অত্যাচারী হয়ে উঠেছিলেন।’

রিজভী আরও বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য সহধর্মিনী এবং বারবার যিনি স্বৈরাচারের অন্ধকার থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছেন, সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনও অসংখ্য মিথ্যাচার-নিপীড়ন সহ্য করেও আপন শিরদাঁড়ায় সংগ্রাম করছেন।’

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠপুত্র ক্রীড়া সংগঠক আরাফাত রহমান কোকোর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে এ দোয়ার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

দোয়া মাহফিলে রিজভী আরও বলেন, ‘আমি আবারও আরাফাত রহমান কোকোর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। এই মৃত্যুর জন্য সম্পূর্ণভাবে শেখ হাসিনা দায়ী। মায়ের এমন অবস্থা কি কোন সন্তান সহ্য করতে পারে? তাই প্রকারান্তরে আরাফাত রহমান কোকোকে হত্যা করেছে এই আওয়ামী লীগ।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com