উচ্ছ্বসিত আঁখি
আঁখি আলমগীর। একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত নায়ক, প্রযোজক, পরিচালক আলমগীরের সুযোগ্য উত্তরসূরী। ১৯৮৪ সালে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় বাবার সঙ্গেই প্রয়াত আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘ভাত দে’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। সেই সিনেমাতে অভিনয়ের পর শিশু শিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন আঁখি। তবে এরপর আর অভিনয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। বাবা মায়ের উৎসাহে নিজেকে একজন সংগীতশিল্পী হিসেবেই গড়ে তোলেন। আঁখি আলমগীর আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে প্রথম দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত ‘বিদ্রোহী বধূ’ সিনেমায় প্লে-ব্যাক করেন। আনোয়ার জাহান নান্টুর সুর সংগীতে সাগর জাহানের সঙ্গে দ্বৈতভাবে এ প্লে-ব্যাকটি করেন তিনি।
এরপর থেকে আজ পর্যন্ত দুই শতাধিক সিনেমায় প্লে-ব্যাক করেছেন। সংগীতে পথ চলতে চলতে উপমহাদেশের খ্যাতিমান শিল্পী রুনা লায়লার প্রথম সুর করা গানেই কন্ঠ দেয়ার সৌভাগ্য হয় আঁখি আলমগীরের। ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আলমগীর পরিচালিত ‘একটি সিনেমার গল্প’-তে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ‘গল্প কথার ঐ কল্পলোকে জানি’ শীর্ষক গানে কন্ঠ দেন। গানটির সংগীতায়োজন করেছিলেন আঁখি আলমগীরেরই বন্ধু ইমন সাহা। আর এই গানটির জন্যই ২০১৮ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ সুরকারের পুরস্কার পেয়েছেন রুনা লায়লা এবং শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন আঁখি আলমগীর। ছোটবেলায় অভিনয়ের জন্য এবং ৩৫ বছর পর বড়বেলায় সংগীতের জন্য এই প্রাপ্তিতে দারুণ উচ্ছ্বসিত আঁখি আলমগীর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই সম্মাননায় আমার নামটি ঘোষণা হওয়ার পর বারবার শুধু একটি কথাই মনে হয়েছে যে, সঠিক সময়েই আমাকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। অনেকেই বলেছেন আমার আরো আগেই গানে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আমার বারবার মনে হচ্ছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের যে ওজন তা বইবার মতো যে বয়স সেটা আমার এখন হয়েছে। তাই সঠিক সময়েই পাওয়া হলো আমার। আর শুরুতেই আমি যার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তিনি আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় রুনা লায়লা। আন্টিই মূলত চেয়েছিলেন আমি যেন গানটিতে কন্ঠ দেই। তার প্রবল উৎসাহের কারণে গানটি গাওয়ার জন্য নিজের ভেতর সাহস সঞ্চয় করেছিলাম। আর আমার বাবা একজন অভিজ্ঞ প্রযোজক, পরিচালক, নায়ক। তার অভিজ্ঞতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা মুর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই বাবার আগ্রহেও গানটি করা। যথারীতি শ্রদ্ধেয় গাজী মাজহারুল আনোয়ার অসাধারণ গীতিকবিতা লিখেছেন এবং আমার বন্ধু ইমন চমৎকার মিউজিক অ্যারেঞ্জম্যান্ট করেছেন। যে কারণে একটি ভালো গান হয়েছে। জনপ্রিয় কিংবা সুপারহিট গান হয়তো নয়। কিন্তু এটি একটি ভালো গান। আর ভালো গানই পুরস্কারের জন্য মূল্যায়ন করা হয়। আমাকে, আমার গানকে, শ্রদ্ধেয় রুনা লায়লা আন্টিকে মূল্যায়ন করা হয়েছে, এটাই আমার অনেক বড় প্রাপ্তি। উল্লেখ্য সম্প্রতি আঁখি কলকাতাতেও সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন।