আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ৫০০ পৃষ্ঠার নথি দিলো গাম্বিয়া

0

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার পূর্ণাঙ্গ আবেদন জমা দিয়েছে গাম্বিয়া। আঞ্চলিক মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটস-এর ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, শুক্রবার জমা দেওয়া ৫০০ পাতার আবেদনে রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমার সরকারের দায় তুলে ধরা হয়েছে।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তারা রাখাইনে হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ শুরু করলে জীবন বাঁচাতে নতুন করে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। 

ওই সময়ের নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া। আবেদনের পক্ষে পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার প্রমাণাদিও উপস্থাপন করেছে দেশটি। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত মামলার প্রাথমিক শুনানির পর মিয়ানমারকে রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা রোধে অস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার অর্ন্তবর্তী আদেশ দিয়ে একটি রুল জারি করেন। 

গাম্বিয়ার প্রাথমিক আবেদনের পর আইসিজে মামলার সমর্থনে বেশ কিছু প্রমাণ পান। এর ভিত্তিতে আদালত মিয়ানমারকে ওই অস্থায়ী আদেশ দেন এবং মামলাটি এগিয়ে নিতে সম্মত হন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গাম্বিয়া এ পূর্ণাঙ্গ আবেদন জমা দিল।

ফরটিফাই রাইটস-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, ‘এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচারের প্রশ্নটি আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ও অন্যদের প্রতি ব্যাপক নৃশংস আচরণ অব্যাহত রয়েছে।’

গাম্বিয়ার এ আবেদনের পর মিয়ানমার আইসিজেতে একটি পাল্টা-আবেদন জমা দেওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবে।

ফরটিফাই রাইটস মনে করে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যা রোধে এবং গণহত্যার প্রমাণ সংরক্ষণের জন্য মিয়ানমারকে এখনই আইসিজের আদেশ পালন করা উচিত।

এ বছর ২৩ জানুয়ারি জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারালয় আইসিজের প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুল কাফি আহমেদ ইউসুফ রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে চারটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ঘোষণা করেন। এগুলো হলো- ০১. রোহিঙ্গাদের হত্যা, মানসিক ও শারীরিক নিপীড়ন ও ইচ্ছাকৃত আঘাত করা যাবে না। ০২. গণহত্যার আলামত নষ্ট করা যাবে না। ০৩. গণহত্যা কিংবা গণহত্যার প্রচেষ্টা বা ষড়যন্ত্র না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ। ০৪. মিয়ানমারকে অবশ্যই চার মাসের মধ্যে লিখিত জমা দিতে হবে, যেন তারা সেখানে পরিস্থিতি উন্নয়নে কী ব্যবস্থা নিয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com