ডেঙ্গু ও বন্যা পরিস্থিতির বুলেটিন দিচ্ছে না স্বাস্থ্য অধিদফতর
রাজধানীসহ সারাদেশের ডেঙ্গু ও বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কিত নিয়মিত বুলেটিন দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এতে করে দেশের ডেঙ্গু ও বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য জানা সম্ভব হচ্ছে না।
অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত দেশব্যাপী ডেঙ্গু রোগীর পরিসংখ্যান এবং চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে কোথায় কতজন রোগী, কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছে, পানিতে ডুবে কিংবা সাপের কামড়ে কতজন আক্রান্ত ও মারা গেছেন সেসব তথ্য-উপাত্ত গণমাধ্যমে পাঠানো হলেও রহস্যজনক কারণে গত ১৮ আগস্টের পর তা বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, বর্তমানে রাজধানীতে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত দুই-তিন মাসের তুলনায় চলতি মাসে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। এছাড়া বর্তমানে দেশের ৩১ জেলায় বন্যা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম থেকে ডেঙ্গু ও বন্যা পরিস্থিতির তথ্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত ভুল বলে মন্তব্য করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাস সম্পর্কিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিন সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্প্রতি এক নির্দেশে বলা হয়, অধিদফতরের পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা ছাড়া কেউ কোনো গণমাধ্যমে কথা বলতে পারবেন না। এমন নির্দেশনার পর থেকেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চিকিৎসক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কেউ কথা বলছে কিনা তাও মনিটর করা হচ্ছে। টেলিফোন ও মোবাইলেও আড়িপাতা হচ্ছে।
এতদিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার। স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের মৌখিক নির্দেশে তিনি আর ওই দায়িত্বে নেই। নতুন করেও কাউকে মুখপাত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। ফলে স্বাস্থ্য অধিদফতরে তথ্য-উপাত্ত পেতে গণমাধ্যমকর্মীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের নতুন মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, তারা খুব দ্রুত অধিদফতরের মুখপাত্র হিসেবে কোন কোন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্য-উপাত্ত প্রদান করবেন তা বলে দেবেন। কিন্তু দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত মুখপাত্র হিসেবে কারও নাম দাফতরিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে বর্তমানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের শীর্ষপদে কর্মরত দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা কি গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন?