কাফনের কাপড় পরে বিজেএমসির সামনে পাট ব্যবসায়ীদের অবস্থান
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর কাছে পাট সরবরাহ বাবদ প্রান্তিক চাষি ও পাট ব্যবসায়ীদের পাওনা ২৬৫ কোটি টাকা আদায়ের দাবিতে শরীরে কাফনের কাপড় বেঁধে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন পাট ব্যবসায়ীরা।
তাদের দাবি, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত পাট সরবরাহ বাবদ বিজেএমসির কাছে এসব টাকা বকেয়া রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিলস্থ বিজেএমসির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল ১০টা থেকে পাট ব্যবসায়ী সমিতির ব্যানারে তারা অবস্থান কর্মসূচী পালন শুরু করেন।
অবস্থান কর্মসূচী থেকে বাংলাদেশ পাট ব্যবসায়ীরা জানায়, পাট ও পাট পণ্য বিক্রি করে আমাদের পাওনা টাকা দেয়ার কথা থাকলেও এ নিয়ে কোনো কথা বলা হচ্ছে না। সম্প্রতি বিজেএমসি ৪০০ কোটি টাকার ফিনিশ পাটের মধ্য থেকে ৩৩২ কোটি টাকার ফিনিশ পাট বিক্রি করেছে। অথচ আমাদের পাওনা বকেয়া মাত্র ২৬৫ টাকা, পণ্য বিক্রি করলেও আমাদের কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে না।
এর আগে রোববার (১৬ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলন করে পাওনা টাকা আদায়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
নজরুল ইসলাম নামে এক পাট ব্যবসায়ী বলেন, পাওনা টাকা আদায়ে প্রধানমন্ত্রী ও পাটমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি কোনো কাজ হয়নি। আজ ব্যাংক ঋণ আর দেনার চাপে দিশেহারা। এখন আমাদের ব্যবসা নাই, পুঁজি যা ছিল তাও হারিয়েছি বিজেএমসির কাছে। এখন সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
পাট ব্যবসায়ী সমিতির কার্যকরী সদস্য মো. সিয়াম হোসেন বলেন, আমরা দুঃসময়-সুসময়ে বিজেএমসির পাটগুলোতে নিয়মিত পাট সরবরাহ করেছি। আমরা গত ঈদ করতে পারিনি, পরিবারেরর খরচ চালাতে পারছি না, সন্তানদদের লেখা-পড়া চালাতে পারছি না। তিনি বলেন, আজ আমরা টাকা আদায় না করে বাড়ি ফিরবো না। কাফনের কাপড় বেঁধে এসেছি প্রয়োজনে এখানে থাজবো তবুও সুরাহ না করে বাসায় যাবো না।
পাট সমিতির আহ্বায়ক শামীম আহমেদ মোড়ল বলেন, সম্প্রতি রাষ্ট্রয়াত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করার আগে মন্ত্রী, এমপি, শ্রমিক নেতাসহ বিভিন্ন স্টক হোল্ডাদের সাথে বৈঠক করা হলেও পাট ব্যবসায়ীদের সাথে কোনো আলোচনা করা হয়নি। মহান জাতীয় সংসদে শাহজাহান খান এমপির প্রশ্নোত্তর পর্বে পাটমন্ত্রীর কাছে তিনি জানতে চেয়েছিলেন পাট ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা কবে পরিশোধ কবে হবে? উত্তরে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পাটকলগুলোতে পাট পণ্য মজুদ আছে, সেগুলো বিক্রি করে পরিশোধ করা হবে। ‘
কিন্তু সম্প্রতি ৩৩২ কোটি টাকার পাট পণ্য বিক্রি করেছে বিজেএমসি, যে অর্থ দিয়ে পাট ব্যবসায়ীদের ২৬৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা সম্ভব ছিল। অথচ পাট ব্যবসায়ীদের পাওনা পরিশোধেরর বিষয়ে বিজেএমসির কাছ থেকে এখনও কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। কিন্তু সে পাট বিক্রি করে বিজেএমসির কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন পরিশোধসহ শ্রমিকেরর মজুরি ব্যয় মেটানো হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে প্রায় শতাধিক পাট ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করেন।