সড়কটি এখন খাল
খোঁড়াখুঁড়ি শুরুর প্রায় এক বছর পার হলেও আটকে আছে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার বোয়ালিয়া সেতু সড়কের নির্মাণকাজ। এর জন্য ঠিকাদারের গাফিলতি, কাজের দীর্ঘসূত্রিতা ও সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়ে শেষ তিন মাস ধরে কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এভাবে মাসের পর মাস মাটি খুঁড়ে ফেলে রাখায় বৃষ্টির পানি জমে রীতিমতো খালে পরিণত হয়েছে সড়কটি। এতে পথচারীদের চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকে আবার সড়কের পাশে রাখা মাটির স্তূপের ওপর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে কাদা-পানিতে পড়ে আঘাত প্রাপ্ত হচ্ছেন। সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, আন্তঃউপজেলা যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বোয়ালিয়া সেতু সড়ক। পাইকগাছা থেকে রাড়–লী, বাকা বাজার আশাশুনির দরগাহপুর ও সাতক্ষীরা সদরে যাওয়ার সহজ মাধ্যম। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক মোটরসাইকেল, ভ্যান ও ভারী যান চলাচল করত। তাছাড়া সড়কের পাশেই রয়েছে অর্ধশতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, তিনটি অটোরাইস মিল, তেলের মিল এবং বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামার ও হ্যাচারি। গুরুত্বপূর্ণ বীজ উৎপাদন খামারে যাওয়ার একমাত্র সড়কও এটি। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হওয়ায় তখন থেকেই চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় তাদের মধ্যে জন্ম নিয়ে চরম ক্ষোভের।
স্থানীয় মুদি দোকানি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মাসের পর মাস সড়কটি খুঁড়ে রাখায় ক্রেতারা দোকানে আসতে পারছে না। ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে, কিছু দোকান বন্ধই হয়ে গেছে। এখন সংসার চলবে কী করে।’ পুরাইকাঠি গ্রামের মফেজ গাজী বলনে, ‘বোয়ালিয়া মোড় থেকে আমার বাড়ি আধা কিলোমিটারেরও কম। কিন্তু সড়ক খুঁড়ে রাখায় প্রায় তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে বাড়ি যেতে হয়।’ এ ব্যাপারে ঠিকাদার ও উপজেলা প্রশাসনের উদাসীনতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাকা এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম।
উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রায় ২.৩ কিলোমিটার বোয়ালিয়া সড়কটি নির্মাণের জন্য ১ কোটি ৯০ লাখ টাকার টেন্ডার হয়েছে। এফটি অ্যান্ড বিবিজেভি জয়েন্ট ভেঞ্চার নামে প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে। ঠিকাদার ডুমুরিয়ার বাবলু রহমান। তবে কাজ করছে স্থানীয় ঠিকাদার মিরাজুল ইসলাম। গত বছরের ১০ অক্টোবর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজ শেষ করার সময়সীমা চলতি বছরের ৯ অক্টোবর।
এ প্রসঙ্গে ঠিকাদার মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বোয়ালিয়া সেতুর দিক থেকে বালি ও খোয়া ফেলা অব্যাহত রয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করা হবে।’ এদিকে উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান খান বলেন, ‘বালি ফেলার কাজ চলছে। বৃষ্টির জন্য একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হবে।’