লোকসানি শাখা বাড়ছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের
সরকারি ব্যাংকের লোকসানি শাখার সংখ্যা বাড়ছে। এক বছরের ব্যবধানে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখা বেড়েছে ৬১টি। একই সাথে এই ব্যাংকগুলোর পরিচালনাগত মুনাফাও কমছে। মূলত করোনা পরিস্থিতির কারণে এই মুনাফা কমে যাচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো ব্যাংকগুলোর নিজস্ব তথ্য মতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বিডিবিএল) ব্যাংকের মোট লোকসানি শাখার স্থিতি ছিল ৩৩১টি। ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯২টিতে। এর মধ্যে সোনালীর ১১০টি, অগ্রণীর ৯৫টি, জনতার ৬৮টি, রূপালীর ৬০টি বেসিকের ৩০টি ও বিডিবিএলের ২৯টি লোকসানি শাখা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সমাপ্ত অর্থবছরে লোকসানি শাখা বেশি বেড়েছে রূপালী ব্যাংকের। এক বছরে ব্যাংকটির লোকসানি শাখা বেড়েছে ৩৯টি। এ ছাড়া বিডিবিএলের ৯টি এবং সোনালী, অগ্রণী ও বেসিক ব্যাংকের লোকসানি বেড়েছে ৫টি করে। এ দিকে ছয় ব্যাংকের মধ্যে লোকসানি শাখা কমেছে একমাত্র জনতা ব্যাংকের। এক বছরে ব্যাংকটি দু’টি লোকসানি শাখা কমাতে পেরেছে।
এ দিকে ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখা বাড়লেও চলমান করোনা পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখার স্থিতি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ছাড় দিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এই বিভাগের সাথে করা বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির আওতায় ছয় ব্যাংকের লোকসানি শাখার সংখ্যা ৩২০টি রাখার কথা বলা হয়েছে। গত অর্থবছরে ব্যাংক ছয়টির লোকসানি শাখা স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫০টি।
গত অর্থবছরে সোনালী ও জনতা ব্যাংকের লোকসানি শাখা স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৯০টি ও ৫৬টি। এটি চলতি অর্থবছরেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের লোকসানি শাখার স্থিতি লক্ষ্যমাত্রা ৬০টি থেকে বাড়িয়ে ৮০টি, রূপালীর ১৫টি থেকে বাড়িয়ে ৫০টি, বেসিকের ১৫টি থেকে বাড়িয়ে ২৪টি ও বিডিবিএলের লোকসানি স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ১৪টি থেকে বাড়িয়ে ২০টি নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ দিকে, রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালন মুনাফাও কমে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচটি বাণিজ্যিক (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বিডিবিএল) ব্যাংককে ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা অর্জন করতে হবে। অন্য দিকে বেসিক ব্যাংকের লোকসান ৩৮০ কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। সব মিলিয়ে ছয় ব্যাংকের পরিচালন মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। সমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা কমিয়ে ধরা হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, সোনালী ব্যাংককে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা (গত অর্থবছরে ছিল ১,৯০০ কোটি টাকা); জনতা ব্যাংককে ৮০০ কোটি টাকা (গত অর্থবছরে ছিল ১,০০০ কোটি টাকা); অগ্রণী ব্যাংককে ৭০০ কোটি টাকা (গত অর্থবছরে ছিল ৮০০ কোটি টাকা); রূপালী ব্যাংককে ৩০০ কোটি টাকা (গত অর্থবছরে ছিল ৪৫০ কোটি টাকা) এবং বিডিবিএল-কে ৬০ কোটি টাকা (গত অর্থবছরে ছিল ১১০ কোটি টাকা) পরিচালন মুনাফা অর্জন করতে হবে। এ ছাড়া লোকসানি বেসিক ব্যাংককে গত অর্থবছরে মাত্র ১ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা অর্জন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকটি তাও অর্জনে ব্যর্থ হয় বলে জানা যায়।