বন্যায় সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় মা, জুটছে না খাবারও
বন্যায় ঘরহারা হয়েছেন। আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধে, ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে। বন্যার কবলে প্রায় ১ মাস ২০ দিন ধরে বাঁধেই বসতি। খেয়ে না খেয়ে জীবনটাই রয়েছে তাদের।
বড় ছেলে লিমন পড়তেন ক্লাস সেভেনে। আনুমানিক ১৩ বছর। গিয়েছিলো মাছ ধরতে। মাছ ধরতে জাল ফেলছিল সে। এমন অবস্থায় পড়ে যায় নৌকা থেকে।
জালের রশি এক হাতে বাঁধা ছিল তার। নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে স্রোতের তোড়ে আর তীরে উঠতে পারিনি সে। তলিয়ে যায় নিচে।
বড় ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় লাকী খাতুন। ২০ দিন আগে মারা গেলেও মায়ের মন মানা দায়। ছেলের কথা বলতেই দাঁড়ানো অবস্থা থেকে বসে পড়েন। মুখ লুকিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছাওয়াটা আমার ক্লাস ফাইভে এ প্লাস পাইছিল। খুব পড়া নেকায় (লেখা) ভালো আছিল। এই অল্প বয়সেই সংসারের জন্যে কাজ করতিছিল।
এসব বলে আবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। জানান, বাঁধেই বাস খাবারটাও জুটছে না নিয়মিত। সারাদিনে একবার ভাত জোটে। সেই ভাত খান শাক পাতা দিয়ে। ক্ষুধার চোটে ভুলে যান সব। কিন্তু খাবার মিলবে কোথায়? তাদের বাড়িতে এখনো হাঁটু পানি। হঠাৎ পানি ওঠায় নিয়ে আসতে পারেননি কিছুই। বাড়িতে চাল-ডাল থাকলেও বানের পানিতে পচে গেছে সেগুলো। বাঁধ ভেঙ্গে এতটাই স্রোত ওঠে যে কোন কিছু নৌকা দিয়েও আনা সম্ভব হয়নি।