হাসপাতাল যখন মানুষ মারার কল
রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক প্রতারক শাহেদ। খবর চাউর আছে জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক কিশোরী তার এই হাসপাতালে খুন হয়েছেন। এই কান্ড ঘটিয়েছে তার নিয়োগকৃত এক ভুয়া চিকিৎসক। সরকারি বেসরকারি অনেক হাসপাতালেই ঘটছে এমন ভুল চিকিৎসা ও অবহেলাজনিত মৃত্যুর ঘটনা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দেশের হাসপাতালগুলো এখন পরিণত হয়েছে মানুষ মারার কলে। অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে তারা ফিরছে লাশ হয়ে। জীবন্ত মানুষ নিয়ে অনেক হাসপাতাল খেলছে মরণ খেলা। অসুস্থ মানুষকে জিম্মি করে তাদের পরিবারের কাছ থেকে আদায় করছে অর্থ।অমানবিক এ চিকিৎসা বাণিজ্য চলছে দেশ জুড়ে। একবার কেউ এই কলে পড়লে তার আর রক্ষা নেই। করোনাকালে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এ পরিস্থিতি। ফলে মানুষ অসুস্থতা নিয়ে বাড়িতে বসে ধুঁকছে। ক্রমেই হয়ে উঠেছে হাসপাতাল বিমুখ।
অনিয়ন্ত্রিত বেসরকারি অনেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দয়ভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে মূমুর্ষ রোগীদের অর্থ কড়ি। ভূয়া ল্যাব টেস্ট, রিপোর্ট ও ভুল চিকিৎসা দিয়ে মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর মুখে। ভিআইপি ও উচ্চবিত্তদের জন্য অবশ্য রয়েছে বিশেষায়িত হাসপাতাল। এ দুঃসময়েও বিদেশে উড়াল দিচ্ছেন অনেকে। কিন্তু বিপদ হয়েছে সাধারণ মানুষের। কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই তাদের। ঘুরে ফিরে তাদেরকে স্থানীয় সরকারি বেসরকারি হাসপাতালেই দৌড়াতে হয়। এভাবেই সাধারণ মানুষ অসুস্থতা নিয়ে বেঁচে আছে নামমাত্র চিকিৎসা পেয়ে । চিকিৎসা ক্ষেত্রে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষ বরাবরই অবহেলিত, প্রতারিত হয়ে আসছে। করোনা মহামারিতে চিকিৎসা সেবা হাতছাড়া হয়ে গেছে সাধারণ মানুষের। করোনা রোগী নয় এমন অসুস্থ যারা তাদের হয়রানির শেষ নেই। জীবন বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য তারা এক হাসপাতাল থেকে ছুটছে আরেক হাসপাতালে। কোথাও ঠাঁই নেই। অগত্যা রাস্তায় প্রাণ হারাতে হচ্ছে অনেককে। বেড়েই চলছে দেশের মানুষের অস্বাভাবিক এ মৃত্যু হার। করোনাক্রান্ত হলে তো কথাই নেই। বেশীর ভাগই সুযোগ পাচ্ছে না হাসপাতালে ভর্তির। আর যারা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে তাদের করোনার সঠিক পরীক্ষা ও সুচিকিৎসা না থাকায় মরতে হচ্ছে অকাতরে। ভেন্টিলেটর তো দূরের কথা সামান্য অক্সিজেনের সরবরাহ নেই অনেক হাসপাতালে।
করোনাকালে দেশের গোটা চিকিৎসা ব্যবস্থা পড়েছে মুখ থুবড়ে। জমজমাট হয়ে উঠেছে অসৎ চিকিৎসা বাণিজ্য। মোক্ষম এই সুযোগের সদ্বব্যবহার করছে হাসপাতাল মালিকরা। ঠগবাজি, প্রতারণা কত প্রকার ও কি কি তার প্রমাণ রেখে চলেছে চিকিৎসা সেবার সাথে সম্পর্কিতরা। প্রতারক শাহেদ করিম ও ডাঃ সাবরিনা এক্ষেত্রে দু’টো স্যাম্পল বা নমুনা মাত্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা ও সিংহভাগ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালক, দলীয় আর্শীবাদপুষ্ট এক শ্রেনীর চিকিৎসক মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। অত্যন্ত মজবুত ও টেকসই এ সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট বারোটা বাজিয়েছে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার। ফোকলা করে দিয়েছে হাসপাতালগুলোর অন্দর বাহির। এদের দুর্নীতি, অনিয়ম, প্রতারণা ওপেন সিক্রেট। এসব নূতন কিছু নয়। কিন্তু চোরের দশ দিন আর গৃহস্থের একদিন বলে একটা কথা আছে। প্রতারক শাহেদ ও ডাঃ সাবরিনারা পড়ে গেছেন এই প্যাচে। কোভিড-১৯ এর ভুয়া রিপোর্ট দিতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন তারা। তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন পজিটিভ নেগেটিভ খেলায়। কি ভয়ঙ্কর খেলা মানুষের জীবন নিয়ে। টাকার বিনিময়ে করোনার মতো ঘাতক ব্যাধির ভূয়া রিপোর্ট। করোনা রিপোর্টের জালিয়াতিতে নিজের বাপকেও ছাড় দেয়নি শাহেদ। প্রথমে শাহেদের রিজেন্ট ও সাবরিনার জেকেজি হাসপাতালের জালিয়াতি ও প্রতারণার বিষয়টি টক অব দ্যা কান্ট্রিতে পরিণত হয়। এখন একে একে বেড়িয়ে আসছে আরো অনেক হাসপাতাল ও ব্যক্তির নাম। এভাবে লোম বাছতে থাকলে কম্বলের আর কিছু থাকবে না। গ্রেফতার করা হয়েছে বড় এই দুই দাগী প্রতারককে। এ নিয়ে নাটকও দেখেছে দেশবাসী। এখন অদ্ভূত এসব প্রাণীর প্রদর্শনী চলছে মুল্যবোধ হারানো টিভি চ্যানেলগুলোতে। এমন সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে মনে হয় গোটা দেশের চলমান বেহাল অবস্থার পুরো দায়ভার শাহেদ ও সাবরিনার। বাকিরা সব তুলসি ধোয়া। এমন কোন অপকর্ম বা প্রতারণা নেই যা শাহেদের দ্বারা সম্পন্ন হয়নি। তাই যদি হয়ে থাকে তা হলে তার মদদদাতা বা গড ফাদার কারা? এসব প্রশ্ন সামনে আসছে না কেন। শাহেদ তো সরকারি দলের নেতা। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সেনাপতি থেকে শুরু করে গ্রামের চৌকিদার সবার সাথে তার দহরম মহরম। গায়ে গা লাগানো ছবি। শাহেদ বিপদে পড়ে প্রথমেই ফোন করেন স্বরাস্ট্রমন্ত্রীকে। মন্ত্রী নিজ থেকেই একথা বলেছেন। এ যেন হিন্দি সিনেমার দৃশ্যপট। কতোটা হৃদ্যতা থাকলে একজন ভয়ংকর প্রতারক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে ফোন করার সাহস পায়।
করোনার মহামারি দেখা দিলে চিকিৎসা নিয়ে শুরু হয় প্রতারণা-জালিয়াতির। হাসপাতালে নকল পিপিই সামগ্রী সরবরাহের মধ্য দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয় অনেক চিকিৎসককে। যার সাথে জড়িত ছিলেন সরকারি দলীয় লোকজন। রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্স নেই জেনেও হাসপাতালটিকে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা করার সুযোগ দেয়া হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রীর উপস্থিতিতে ও স্বাস্থ্য মহাপরিচালক প্রকাশ্যে চুক্তিপত্রে সই করেন শাহেদের সাথে। অন্যান্য বেসরকারী হাসপাতালের সাথে একই কায়দায় করা হয় চুক্তি। এসব কিছুই সম্পন্ন হয়েছে স্বেচ্ছায় ও সজ্ঞানে। এখন মন্ত্রী ভোল পাল্টে বলছেন অন্য কথা। প্রতারণা ধরা পড়ায় দোষ বর্তেছে শাহেদ নন্দ ঘোষের উপর।
সঠিক তদন্ত হলে দেখা যাবে কি সরকারি কি বেসরকারি প্রতিটি হাসপাতালেই চলছে একই অবস্থা। কোথাও নিরাপদ নয় সাধারণ মানুষ। ভিআইপি বা ভিভিআইপি যাদের ‘লাইভস ম্যাটার’ করে তাদের জন্য তাৎক্ষণিক চিকিৎসা ব্যবস্থা হচ্ছে সিএমএইচে। এখানে ভর্তি হতে হলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রারম্ভিক সুপারিশ বা অনুমোদন প্রয়োজন। এজন্য সুবিধাভোগী শ্রেনীর অসুস্থদের একটি তালিকা প্রস্তুত থাকে সিএমএইচে। অমূল্য এ জীবনধারীদের অনেকে আবার আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছে বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ। আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ নাকি পুরোটাই বায়না করে রেখেছে বিত্তবানরা। এজন্য হাসপাতালটি সাধারণ করোনা রোগীদের চিকিৎসা করবে সরকারের সাথে এমন চুক্তির পর তা বাতিল করে দেয়। বেসরকারি গলাকাটা বড় বড় হাসপাতালগুলো করোনা রোগী নিয়ে করছে তামাশা। ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকান্ডে মারা গেছে কয়েকজন। এ নিয়ে তেমন কোন কিছু হয়েছে বলে জানা যায়নি। বেসরকারি হাসপতালগুলোতে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই সরকারের। চিকিৎসার মান যাচাই বাছাই করবে এমন কোন নিয়ম-নীতি না থাকায় তারা ফ্রি স্টাইল ব্যবসায় করছে রোগীদের জিম্মি করে। অসুস্থ হলেই রোগীকে নেয়া হয় আইসিইউতে। সেখানে রোগী মারা যাওয়ার পরও নাকি আদায় করা হয় অতিরিক্ত অর্থ। এসব অমানবিক আচরণ গা সহা হয়ে গেছে মানুষের। এ নিয়ে প্রায়শই রোগীর আত্মীয়-স্বজন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপর হামলে পড়ছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে বাড়াবাড়িও হচ্ছে। স্বাভাবিক মৃত্যুর দায় চিকিৎসকের উপর চাপানোর চেষ্টা থেকেও ঘটছে হাঙ্গামা। দেশের হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই। ল্যাবরেটরী নেই। আইসিইউ নেই। অক্সিজেন সরবরাহ নেই। জীবন রক্ষাকারী ঔষধ নেই। চিকিৎসক নেই। নার্স নেই। নেই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যকর্মী। পর্যাপ্ত বাজেট নেই। চারিদিকে শুধু নেই নেই। আর যা কিছু আছে তা ভরপুর নকল ও ভেজালে।
শাহেদ সাবরিনারা করোনার ভূয়া রিপোর্ট দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। করোনার ভূয়া সার্টিফিকেট নিয়ে ইতালি পৌছলে ১২৫জন যাত্রী সহ কাতার এয়ারলাইন্সের বিমান যাত্রী সহ ফেরত পাঠানো হয়েছে। অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশিদের ইতালি প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে দেশটি। আরো অনেক দেশ হাঁটছে একই পথে । কারোনা বাণিজ্যের এ সংবাদ নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, আলজাজিরা সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে। বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে নূতন নেতিবাচক মাত্রা যোগ হলো এ ঘটনায়। এ কারণে বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়বে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। সবকিছু মিলিয়ে নজিরবিহিন নাজুক অবস্থায় দেশের স্বাস্থ্যখাত। তারপরও ধরা খাওয়া শাহেদ-সাবরিনা ছাড়া মন্ত্রী-আমলারা বহাল তবিয়তে আছেন সবাই। থাকবেনই না কেন দেশে ভিআইপি, ভিভিআইপিদের জন্য সিএমএইচ আছে। তারা ব্যর্থ হলে ব্যাংকক সিঙ্গাপুর নেয়ার জন্য প্রস্তুত আছে এয়ার এম্বুলেন্স। এই শ্রেনী এতোটাই বিত্তবান যে করোনাকালে বিমান চার্টার করে অনেকে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বিবিসি জানিয়েছে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী লন্ডনে আছেন চিকিৎসার জন্য। সম্প্রতি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করোনা বালাই সারাতে ব্যাংকক গিয়ে মারা যান। আগে নেতা-নেত্রীরা যাই হোক দেশের মাটিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করতেন। এখন ঘটছে তার উল্টোটা। এই রাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতির চিকিৎসা নেই। শারীরিকভাবে সুস্থ কিনা এটা পরীক্ষার জন্য বছরে একবার লন্ডনে এবং আরেকবার সিঙ্গাপুর যেতে হয় রাষ্ট্রপতিকে। নিজ দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর তাদের কারো কোন আস্থা নেই। ফলে স্বাস্থ্য বিভাগ অনেকটাই পরিত্যাক্ত অবস্থানে। ব্যাঙ্গের ছাতার মতো মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। কিন্তু সুযোগ সৃষ্টি হয়নি মানসম্মত কোন চিকিৎসা সেবার। চিকিৎসার জন্য মানুষ হাসপাতালে গিয়ে শিকার হচ্ছে হয়রানি ও প্রতারণার। মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকে কষ্ট করে ভারতে যাচ্ছে চিকিৎসার জন্য। সেখানেও বাংলাদেশি দালালদের খপ্পড়ে পড়ে সর্বশান্ত হয়ে ফিরছে অনেকে।
অসুখ মানেই সুখ নেই। মানুষ সবচেয়ে বেশী অসহায় অনুভব করে যখন তাকে কাতরাতে হয় হাসপাতালের বিছানায়। এসময় সবকিছুর বিনিময়ে হলেও ধরে রাখতে চায় তার জীবন। আর এ অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেনীর হাসপাতাল মালিক, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী লুটে নেয় তাদের সর্বস্ব। শাহেদ-সাবরিনারা এই লোভী-লুটেরা ও প্রতারক শ্রেনীর প্রতিভূ। এদের সিন্ডিকেট গুড়িয়ে দিতে না পারলে এধারা অব্যাহতই থাকবে। সরকারের মন্ত্রী, আমলারাদের আনতে হবে জবাবদিহিতার আওতায়। স্বাস্থ্য নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রণ আইন ছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল চলবে এভাবেই। সরকারি হাসপাতালের অবস্থাও তথৈবচ। করোনাকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা নাকি ২০-কোটি টাকার খাবার খেয়েছেন। এতো টাকার খাবার খেলে তারা রোগী দেখার সময় পেলো কখন? সময় এসেছে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভুল এবং অবহেলাজনিত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের আইনী শাস্তির আওতায় আনা। ম্যাল প্র্যাকটিস আইন বলবৎ করা। উন্নত দেশগুলোতে এই ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকায় চিকিৎসা সেবার মান উন্নত। দেশের চিকিৎসা খাতে বাজেট বাড়ানো। সময়োপযোগী স্বাস্থ্যনীতি প্রর্বতন। দুর্নীতি-অনিয়ম কঠোর হস্তে দমন। বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা প্রনয়ণের কোন বিকল্প নেই। বিদেশে ধনবানরা দাতব্য ও অলাভজনক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। নিজ অর্থে প্রতিষ্ঠিত এসব হাসপাতাল দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করে। আর আমাদের দেশের বিত্তবানরা ব্যাংক বীমা লুট করে বিদেশে পাড়ি জমান চিকিৎসার জন্য। মানসিকতা ও মানবিকতার পার্থক্য এখানেই। এছাড়া সমাজের অন্যান্য দিকের মতো চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রেও বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠেছে দেশে। সরকারের শীর্ষ মহল থেকে শুরু করে একটি শ্রেনী ভোগ করছে অপার সুযোগ সুবিধা। আর সাধারণ মানুষ মরছে বেশুমার। স্বাস্থ্য সুবিধা পাওয়া নাগরিকদের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। এ বৈষম্য যতদিন থাকবে ততোদিন সচল থাকবেই মানুষ মারার এসব কল কারখানা। সবশেষে প্রখ্যাত ভারতীয় কবি কাইফি আজমি’র কবিতার কয়েকটি পংক্তি দিয়ে শেষ করবো-
কারো জন্য উপচে পড়ে সাগর
অন্যদের গ্লাস খালি!
কেমন সময় এটা
কেমন বিষম বাটোয়ারা-ওগো সাকি?
এখনো ধারণ করতে পারোনি তুমি
তৃষ্ণার্তের স্বভাব?
দেবার ধরণ তোমার বদলাতেই হবে
ওগো সাকি।
লেখক : সম্পাদক, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ।
নিউ ইয়র্ক।