বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোই এখন বড় কোরবানি
সবাই যখন কোরবানির পশু কেনা নিয়ে ব্যস্ত তখন দেশের অনেক অঞ্চলের মানুষ বন্যার আঘাতে ভয়াবহ রকম বিপর্যস্ত।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্সের (ওসিএইচএ) মতে, এ সপ্তাহে বাংলাদেশের মোট জেলার অর্ধেক বন্যাকবলিত হয়ে পড়বে। একদিকে করোনাভাইরাস অন্যদিকে বন্যা। বন্যায় ভেসে গেছে কৃষকের হাজার হাজার হেক্টর ফসলের মাঠ, মানুষের ঘরবাড়ি-বসতভিটা-রান্নাঘর, ব্যবসায়ীর কল-কারখানা-প্রতিষ্ঠান।
অনাহারে-অর্ধাহারে নিদারুণ কষ্টে কাটছে বন্যার্ত মানুষের জীবন। ইসলাম মানবকল্যাণের ধর্ম। পবিত্র কোরআন ও হাদিসের প্রতিটি পৃষ্ঠায় রয়েছে মানবকল্যাণের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেয়ার কড়া নির্দেশ। আমরা যখন কোরবানির মাংস খাওয়ার আনন্দে বিভোর, ঠিক তখনই আমাদের বন্যার্ত ভাই-বোনেরা একটু খাবার আর সুপেয় পানির জন্য চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব সামান্য ভয়, ক্ষুধা, জানমাল ও ফল-ফলাদির ক্ষতি দিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে যারা ধৈর্য ধারণ করবে, হে নবী! তুমি তাদের জান্নাতে সুখের দিনের সুসংবাদ দাও। (সূরা বাকারাহ, আয়াত : ১৫৫।) করোনা এবং বন্যা আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পরীক্ষা। যারা বন্যাকবলিত তারা যেন এ সময় ধৈর্য ধারণ করেন, আর আমরা যারা মোটামুটি নিরাপদ আছি আমরা যেন তাদের পাশে দাঁড়াই এখন এটাই আমাদের বড় ইবাদত এবং কোরবানি।
হাদিস শরিফে রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘দুনিয়ায় আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কাউকে খাবার দিলে আল্লাহ তোমাকে জান্নাতে খাবার দেবেন। দুনিয়ায় কাউকে পানি পান করালে আল্লাহ জান্নাতে তোমাকে পানি পান করাবেন। আর দুনিয়ায় কাউকে কাপড় দিলে জান্নাতে আল্লাহ তোমাকে কাপড় দেবেন।’ (আবু দাউদ।) পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুমিনরা একে অন্যের ভাই। (সূরা হুজরাত, আয়াত ১০।) বন্যার্ত বিপদগ্রস্তরাও আমাদেরই ভাই। তাদের কথা ভাবলে কষ্টে বুক ফেটে যায়। আমরা যারা সামর্থ্যবান আছি, আমাদের জন্য ফরজ হল বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। হে আল্লাহ! আমাদের থেকে বন্যা এবং করোনাভাইরাসের আজাব তুলে নিন। আমিন।
লেখক : শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়