করোনা যে চাপ সৃষ্টি করেছে ইসরাইলের ওপর

0

করোনা মহামারীর সাথে অচিরেই যোগ হচ্ছে ‘অর্থনৈতিক মহামারী’। করোনা জীবন সংহার করে চলেছে, অর্থনৈতিক মহামারী সমাজ ও রাষ্ট্র-জীবনের মজ্জা ও নির্যাসকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ইতালির মতো দেশে কলকারখানা ও প্রডাকশন লাইন বন্ধ হওয়ায় অনেক পরিবারের রোজগার নেই, এমনকি অনেকের ভিক্ষা করারও সুযোগ মিলছে না মর্মে রিপোর্ট পাওয়া গেছে। অচিরেই অনেক দেশ নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশ চায় অর্থনৈতিক মহামারীকে জয় করতে। কিন্তু চীন যেভাবে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো তা পারেনি। চীন ও জাপান করোনার ওষুধ আবিষ্কার করে যুক্তরাষ্ট্রের মনোপলি শুরুতেই ভেঙে দিয়েছে। চীন বৈশ্বিক পজিশনে যুক্তরাষ্ট্রকে পশ্চাতে ফেলার উপক্রম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে তার উৎপাদিত ড্রাগ ছাড়ার আগেই বিভিন্ন দেশে চীনের ড্রাগ ও টেকনিক গ্রহণের হিড়িক পড়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র করোনা ড্রাগের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য হন্যে হয়ে জার্মান রিসার্চ কোম্পানি ‘কিউরভ্যাক’কে যুক্তরাষ্ট্রে এসে কাজ করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

জার্মানি জানিয়েছে, কিউরভ্যাক বিশ্বের জন্য ভ্যাকসিন বানাবে, বিশেষ কোনো দেশের জন্য নয়। তা ছাড়া ইতালি কোনো সহায়তা না পেয়ে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। চীনা বিমানগুলো চীনের প্রোডাক্ট নিয়ে ইতালিতে সহায়তা দিচ্ছে এবং একই সাথে নগদে ওষুধ-সামগ্রী বিক্রি করছে। বেইজিং একইভাবে স্পেনেও সহায়তা দিতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, অবস্থা এমন হলে তার দেশ চীনের সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে। এভাবে করোনা মহামারীর সুযোগে চীনের উত্থান ঘটছে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে শুরু করা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এবং ‘নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার’ এখন থমকে দাঁড়িয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে চীনের নেতৃত্বে নতুন বিশ্বব্যবস্থা আসন গেড়ে বসতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের এই মহাসঙ্কটময় সময়ে চাপ পড়েছে ইসরাইলের ওপর। ইসরাইল ‘লাস্ট লাইন অব ডিফেন্স’ হিসেবে সহায়তার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। ইসরাইল চায় পুরো ভাইরাস ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও অনেক দেশকে এর ধাক্কা সামলাতে হবে!

ক্ষুদ্রকায় ভাইরাসও বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়ে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রক্ষমতার পরিবর্তন সাধন করতে পারে। ‘পাওয়ার শিফটিং’ রাজনীতিতে যেমন হবে, দেশের সরকার ব্যবস্থায়ও হতে পারে। কোনো দেশের পতনও হতে পারে। করোনা-পরবর্তী বিশ্ব নতুন রূপ নিতে পারে। ইসরাইল জরুরি ভিত্তিতে সংক্রমণ রোধের জন্য ডিজিটাল টেকনোলজির উন্নয়ন ঘটিয়েছে। ভাইরাসের আক্রমণের সাথে সাথে মোবাইল ও ঘড়ির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে সংবাদ পৌঁছাবে এবং তা প্রতিহত করার জন্য ড্রাগস ব্যবহার করবে। এই পদ্ধতি ব্যবহারে ইসরাইল প্রস্তুত। এখন একটিই সমস্যা ভাইরাস যদি দ্রুত চরিত্র বা জিন বদল করে ফেলে, সেভাবে টেকনোলজির পরিবর্তন সম্ভব হবে না। মধ্যবর্তী সময়ে অনেক লোক মারা পড়বে। প্রাথমিকভাবে এই টেকনোলজি ইসরাইলের সেনাবাহিনীতে ব্যবহার করার জন্য তার আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। কেননা, এই পদ্ধতির ফলে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্তও পাচার হয়ে যাবে। আর পদ্ধতিটি প্রয়োগের ফলে কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন হবে না। এই টেকনোলজির কারণে অদৃশ্য ভাইরাসের গতিবিধি লক্ষ করা যাবে। এখন চেষ্টা চলছে নিয়ন্ত্রণের। নেতানিয়াহু বলেছেন ‘বাঁচতে হলে এই মুহূর্তে অন্য কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com