যুক্তরাষ্ট্র ঐতিহাসিক সুযোগ হারিয়েছে: ইরান
করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঐতিহাসিক সুযোগ যুক্তরাষ্ট্র হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলেও করোনা মোকাবিলায় তেহরানের প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তিনি এসব কথা বলেন বলে খবর দিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বিশ্বজুড়ে মহামারিতে পরিণত হওয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অন্যতম দেশ ইরান। দেশটির সরকারি হিসেবে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ আর মারা গেছে তিন হাজারেরও বেশি। পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দেশটির ওপর দীর্ঘদিন ধরেই বহাল রয়েছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। করোনা মহামারির সময়ে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানায় চীন ও জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করতে পারে ওয়াশিংটন। তবে কবে নাগাদ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হতে পারে সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।
বুধবার ইরানের মন্ত্রিসভার এক বৈঠকের পর টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সবচেয়ে ভালো সুযোগ যুক্তরাষ্ট্র হারিয়ে ফেলেছে। আমেরিকানদের ক্ষমা চাওয়ার… এবং ইরানের ওপর অন্যায্য ও অন্যায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এটাই সবচেয়ে ভালো সুযোগ ছিল’। তিনি বলেন, ‘আমেরিকানরা এই সুযোগ নিতে পারতো আর ইরানকে বলতে পারতো যে তারা তাদের বিরুদ্ধে নয়’।
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বিরোধ নতুন করে বাড়তে শুরু করে। তেহরানকে নতুন পরমাণু চুক্তিতে বাধ্য করতে ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের নীতি গ্রহণ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
করোনা মহামারি শুরু হলে ইরানকে মানবিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা অবস্থায় তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি।
ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে করোনা মহামারি মোকাবিলায় বেগ পেতে হয়েছে তাদের। তবে বুধবার প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, ‘করোনা মহামারি মোকাবিলায় আমাদের প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। তিনি বলেন, মহামারি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নির্মাণে আমরা প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই রোগ মোকাবিলায় অন্য অনেক দেশের তুলনায় আমরা অনেক বেশি সফল’।
মহামারির সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কাতার ও তুরস্কসহ বেশ কিছু দেশ ইরানে চিকিৎসা সামগ্রী পাঠিয়েছে।