আফগানিস্তানে আমেরিকার পক্ষে বিজ্ঞাপন প্রচার না করেই কোটি কোটি ডলার লোপাট
একটি তথ্য অপারেশান ঠিকাদার যুক্তরাষ্ট্রপন্থী টেলিভিশন ও রেডিও বিজ্ঞাপন তৈরির জন্য পেন্টাগনকে বহু মিলিয়ন ডলারের বিল দিয়েছে, যে বিজ্ঞাপনগুলো আফগানিস্তানে কখনও প্রচারই করা হয়নি। কোম্পানিটির সাবেক প্রেসিডেন্ট একটি মামলায় এ অভিযোগ করেছেন।
লিওনি গ্রুপ – লিওনি ইন্ডাস্ট্রিজ নামেও যারা পরিচিত – এই গ্রুপটি ২০০৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে পেন্টাগনের প্রচারণামূলক পণ্য তৈরি করেছে। টিভি, রেডিও ও বিলবোর্ডের বিজ্ঞাপনের জন্য এই ফার্মটি ১২০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল। মামলার নথিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এই মামলাটি প্রথম করা হয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। এতে অভিযোগ করা হয় যে, লিওনি জানতো যে, তাদের বিজ্ঞাপনগুলো আদৌ আফগান জনগণ দেখবে কি না, সেটা যাচাই করার তাদের কোন উপায় নেই।
আদালতে উপস্থাপিত নথিতে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে মার্কিন সামরিক বাহিনীর দাবির প্রেক্ষিতে কোম্পানিটি যখন তাদের কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করা শুরু করে, তখন তারা দেখতে পায় যে, তাদের তৈরি করা টিভি বিজ্ঞাপনগুলোর মধ্যে ৭৫ শতাংশেরও কম এবং রেডিও বিজ্ঞাপনের ৪৫ শতাংশেরও কম প্রচারিত হয়েছে।
কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লস ওয়েনস এক ইমেইলে জানিয়েছেন যে, বিচারাধীন মামলা নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে পারবেন না।
লিওনির সাবেক প্রেসিডেন্ট স্কট ক্রেলার কলাম্বিয়াতে ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে এই মামলাটি দায়ের করেন।
ক্রেলার অভিযোগ করেন যে, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে বরখাস্ত করা হয় কারণ তিনি মার্কিন সামরিক বাহিনীর কাছে ৪.৫ মিলিয়ন ডলারের সাইকোলজিক্যাল অপারেশান্স ইনভয়েস দিতে অস্বীকার করেছিলেন, যেখানে অধিকাংশ ইস্যুতেই সরকারের কাছে দ্বিগুণ বিল দেয়া হয়েছিল।
ক্রেলার ২০১১ সাল থেকে এই কোম্পানির গ্লোবাল অপারেশান্স ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন এবং ২০১৬ সালে কোম্পানির প্রেসিডেন্ট করা হয় তাকে। তিনি বলেছেন, এই ক্লেইম উপস্থাপনের জন্য তাকে কয়েক মাস ধরে চাপ দেয়া হয়।
ফলস ক্লেইমস অ্যাক্টের অধীনে মামলাটি করেচেন ক্রেলার। এই আইনের অধীনে সরকারের পক্ষ থেকে কোন নাগরিক মামলা করতে পারে।
সরকার ফেব্রুয়ারি মাসে এই মামলার সাথে যুক্ত হয়নি।
ক্রেলারের আইনজীবী ব্রেন্ডান জে ক্লাপরোথ শুক্রবার জানিয়েছেন যে, তারা এই মামলার কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে যেতে চান।
২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত লিওনির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এই কোম্পানিটি স্ট্র্যাটেজিক যোগাযোগ, তথ্য ব্যবস্থা সহায়তা, গোয়েন্দা ও অপারেশান্স গবেষণার ক্ষেত্রে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান।
সামরিক বাহিনী ২০০১ সাল থেকে ইরাক ও আফগানিস্তানে মনস্তাত্বিক অভিযান চালানোর জন্য বহু মিলিয়ন ডলার ব্যায় করেছে। ইরাকি ও আফগান নাগরিকরা যাতে যুক্তরাষ্ট্র ও কোয়ালিশান বাহিনীর মিশনকে সমর্থন করে, সে জন্য এই সব প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।