‘মক্কা-মদিনা শাটডাউন করতে করোনা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি’
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ইহুদি, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি বলে মন্তব্য করেছেন ইয়েমেনি পণ্ডিত ইব্রাহিম আল-উবেইদি। শুক্রবার এক ধর্মীয় বক্তৃতায় তিনি দাবি করেন, ইসলামের পবিত্র দুটি স্থান মক্কা ও মদিনা বন্ধ করে দিতে কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) তৈরি করেছে ইহুদি ও আমেরিকানরা।
এই ইয়েমেনি পণ্ডিতের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে মিডল ইস্ট মিডিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট (মেমরি) রোববার এক টুইটে জানায়, এই মহামারি শুধু এই গোপন ষড়যন্ত্রের ফলই নয়, সৌদি রাজপরিবার গোপনে ইহুদি ধর্ম চর্চাও করে চলেছে। তারা মোরদেচাই (যিনি ইরাক বাস করতেন) নামের এক ইহুদির অনুসারী।
মেমরি প্রকাশিত ওই ভিডিওতে আল-উবেইদিকে বলতে শোনা যায়, ইসলামের দুটি পবিত্র শহর যেখানে ধর্মীয় স্থাপনা রয়েছে, তার দখল নিতে শত শত বছর ধরে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে ইহুদিরা। এ ভাইরাস (করোনা) তাদের সৃষ্টি।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত করা হয় করোনাভাইরাস। এরপর ছড়িয়ে পড়েছে সারাবিশ্বে। এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৭২ হাজার ২২৬ জন আক্রান্ত হয়েছে এই ভাইরাস। মারা গেছে ৩৭ হাজার ২২ জন।
আল-উবেইদির দাবি, প্রয়াত হুসেইন বদরেদ্দিন আল-হুতি (হুতি বিদ্রোহীদের সাবেক নেতা) এই ভাইরাসের ব্যাপারে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তিনি তার প্রশংসা করে বলেন, ‘আল-হুতি বলেছিলেন, ইসলামের এই পবিত্র নিদর্শন দুটি বন্ধ করে দিতে ভাইরাস ও জীবাণুর ব্যবহার করতে পারে ইহুদি ও আমেরিকানরা।’
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এ মাসের শুরুতে পবিত্র নগরী মক্কার ঐতিহাসিক মসজিদুল হারাম সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে সৌদি।
ইসলামি পণ্ডিত ডা. ইয়াসির কাধি টুইটারে এক বার্তায় বলেন, ‘সুবহান আল্লাহ, পবিত্র কাবা এখন জনমানবশূন্য। তাওয়াফ বন্ধ রয়েছে। করোনাভাইরাস আতঙ্কে কর্তৃপক্ষ হারাম শরিফ পরিষ্কার করছেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রক্ষা করুন।’
কাবা শরিফকে প্রথমবারের মতো জনমানবশূন্য দেখে অবাক হয় মুসলিম বিশ্ব। ওই সময় এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় কেউ লেখেন, ‘আমার জীবনে প্রথমবারের মতো কাবা শরিফকে খালি দেখলাম।’ অনেকের মতে, একেবারেই বিরল ঘটনা। আবার কেউ কেউ বলেন, এটা আমি কখনও কল্পনাও করতে পারি নাই।
মুসলিমদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থাপনা মক্কার পবিত্র গ্রান্ড মসজিদ। এই মসজিদের প্রাণকেন্দ্রে কাবা শরিফের অবস্থান। বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করায় সৌদি আরব এর আগে বিদেশি এবং নিজ দেশের নাগরিকদের পবিত্র ওমরাহ পালন স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
ওই ঘটনা প্রসঙ্গে সৌদি নীতির সমালোচনা করেন উবেইদি। ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির গোপন আঁতাতের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘এই ভাইরাসকে যদি ডান্স হলে না পাওয়া যায়, যেখানে নারী-পুরুষরা একসঙ্গে নৃত্য করে তাহলে পবিত্র স্থাপনায় কেন পাওয়া যাবে যেখানে কি না প্রার্থনা করা হয়।’