যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস
অন্য যে কোনও দেশের চেয়ে বেশি বন্দি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারগুলোতে। ২০১৭ সালের হিসাবে দেশটির জেলখানাগুলোতে প্রায় ২৩ লাখ বন্দি রয়েছে। ইউএস ব্যুরো অব জাস্টিস-এর হিসাব অনুযায়ী, এদের মধ্যে ১৫ লাখের মতো রয়েছে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা কারাগারগুলোতে। আর স্থানীয় কারাগারগুলোতে রয়েছে আরও সাত লাখ ৪৫ হাজার বন্দি।
রিকার্স দ্বীপের একটি কারাগার থেকে সোমবার মুক্তি পাওয়া একজন জানিয়েছেন, কারাগারের ভেতরে সুস্থ ও অসুস্থ লোকজন প্রায়ই অবাধে মিশে যান। তিনি জানান, তার কাছাকাছি থাকা একজন বন্দি ও একজন প্রহরীর করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর থেকে তিনি নিজের দুই জনের সেলটিতেই বেশিরভাগ সময় কাটাতেন। তবে ওষুধের জন্য জানালার পাশে অন্য কয়েদিদের সঙ্গেই তাকে লাইন ধরতে হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩২ বছরের একজনের ভাষায়, ‘সেখানে কোনও সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই। চাইলেও আপনি লোকজনের কাছ থেকে দূরে সরতে পারবেন না।’
নিউ ইয়র্ক শহরের সংশোধন বিভাগ জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে কোনও কয়েদির সংক্রমণ ধরা পড়লে সেখানকার অন্যদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ, বন্দিদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখতে উৎসাহিত করা, সেলগুলো পরিষ্কার রাখা ও সাবান সরবরাহের মতো নানা পদক্ষেপ রয়েছে।
পাবলিক ইনফরমেশন বিভাগের কমিশনার পিটার থর্ন বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে আমাদের হেফাজতে লোকজনকে নিরাপদে ও মানবিকভাবে রাখার জন্য সম্ভব সবকিছুই করছে সংশোধন বিভাগ।
কিছু কারাগার থেকে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে এমন কয়েদিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
জর্জিয়ার মেরিয়েত্তায় চুরির অভিযোগে অব্রে হার্ডিওয়ে নামের একজনকে আটক করে কোব কাউন্টি অ্যাডাল্ট ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। আটকের সময় তার কাশি, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা ও ১০৩ ডিগ্রি জ্বর ছিল। অভিযুক্ত ব্যক্তি বলছিলেন, ‘আমি এটি নিতে পারছিলাম না। ভয়ঙ্কর বোধ করছিলাম।’ চার দিন পর তার ফ্লু ও স্ট্রেপ থ্রোট পরীক্ষা করা হয়। দুটোই নেগেটিভ এলে অন্যান্য পরীক্ষার জন্য তাকে কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হার্ডওয়ে জানান, তার করোনভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছিল কিনা এটা তাকে কখনোই বলা হয়নি। তবে একজন চিকিৎসক তার ডেপুটিদের হার্ডিওয়েকে কোয়ারেন্টিন করতে বলেছিলেন। অবশ্য কারাগারে ফেরার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বন্ধুদের মুচলেকায় তিনি মুক্তি পান।