করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা জাপানি প্রধানমন্ত্রীর
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে শনিবার সন্ধ্যায় এক অনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাঁর দেশের জনগণ সুপারিশমূলক সতর্কতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হলে মারাত্মক পরিণতি জাতিকে ভোগ করতে হতে পারে। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে মৃত্যুর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের হাসপাতালগুলো মারাত্মক চাপের মুখে পড়বে। তবে এই মুহূর্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রয়োজন দেখছেন না তিনি।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে রাখার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে শিনজো আবে বলেছেন, জাপানকে এখন এক সংকটপূর্ণ সময়ের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দেশের অর্থনীতির ওপর করোনার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে তিনি থোক বরাদ্দ প্রণয়নের অঙ্গীকার করেন।
এই ভাইরাস সংক্রমণের সমাপ্তি কবে নাগাদ প্রত্যাশা করা যেতে পারে, সেই প্রশ্নের উত্তরে আবে বলেছেন বিশ্বের কোনো দেশের নেতাই এ মুহূর্তে তা বলতে সক্ষম নন এবং দুঃখজনকভাবে তিনি নিজেও তা বলতে পারছেন না। তবে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করেন, সংকট কাটিয়ে উঠতে সাহসী ও উদ্দীপনামূলক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে তাঁর সরকার পিছিয়ে থাকবে না। উদ্দীপনা থোকের আওতায় কঠিন অবস্থার মুখে পড়া পরিবারের জন্য নগদ অর্থ সাহায্য দেওয়া ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসার জন্য সুদ-মুক্ত ঋণ প্রদান এবং দেশের উৎপাদন খাতকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
শনিবারের এই সংবাদ সম্মেলনের আগে অনেকেই ধারণা করেছিলেন, জাপানের রাজধানীতে গত কয়েক দিনে হঠাৎ করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে লকডাউন কিংবা জরুরি অবস্থা জারির মতো পদক্ষেপের ঘোষণা তিনি হয়তো দেবেন। তবে প্রধানমন্ত্রী দৃশ্যত সেরকম পদক্ষেপ গ্রহণের আগে আরও কয়েক দিন পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে চাইছেন। এদিকে রাজধানী টোকিওতে শনিবার চতুর্থ দিনের মতো করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার রেকর্ড সংখ্যক হিসাব পাওয়া গেছে। শনিবার টোকিওতে আরও ৬৩ জনের করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। এর ফলে প্রমোদতরি ডায়মন্ড প্রিন্সেসের প্রায় ৭০০ সংক্রমণ নিয়ে জাপানে করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের সংখ্যা এখন ২ হাজার ৪০০ জন ছাড়িয়ে গেছে।
করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকেনি জাপানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিও। মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ফক্স নিউজ শুক্রবার জানিয়েছে, জাপানে অবস্থানরত বিমানবাহী রণতরী রোনাল্ড রিগ্যানের দুজন নৌ-সেনার দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ খুঁজে পাওয়ার পর টোকিওর পাশের ইওকোসুকা নৌ ঘাঁটি সপ্তাহান্তের জন্য লকডাউনে রাখা হয়েছে। নৌ ঘাঁটির সকল সেনাসদস্য ও বেসামরিক কর্মীকে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ঘরের ভেতরে অবস্থান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।