যে কৌশলে করোনা মোকাবেলায় সফল রাশিয়া
চীনের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত থাকার পরও রাশিয়াকে কাবু করতে পারেনি করোনাভাইরাস। দেশটিতে এখন পর্যন্ত সংক্রমণের হার খুবই কম।
শনিবার পর্যন্ত রাশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ২৬৪ জন। মারা গেছেন মাত্র চারজন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইউরোপের দেশগুলো চরম সংকটের মধ্যে রয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী রাশিয়ায় কার্যত আক্রান্তের সংখ্যা খুবই সীমিত।
বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি উপলব্ধি করেই দেশজুড়ে লকডাউন জারি করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস নিয়ে রাশিয়া অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছে। বৃহস্পতিবার পুতিন জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে সপ্তাহব্যাপী বেতনসহ ছুটি ঘোষণা করেছেন।
দেশটিতে সব ধরনের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। যাতে বেশি মানুষ একসঙ্গে সমবেত হতে না পারে।
কারাসনোডার শহরের গভর্নর বেঞ্জামিন কনড্রাতিয়েভ কৃষ্ণসাগরের সোচি বিচসহ সব বিক্রয় কেন্দ্র, পার্ক ও রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছেন। বিমানের ফ্লাইট সীমিত করা হয়েছে।
ইন্সটাগ্রামে কনড্রাতিয়েভ লেখেন, ‘ছুটি কাটানোর সপ্তাহ এটি নয়। এটি করোনাভাইরাসের খারাপ সময়।’
পুতিন ভাষণের পর থেকে দেশে মাস্ক পরার সংখ্যাও বেড়েছে। সুপারমার্কেটের কর্মচারীরাও মাস্ক পরছেন। কফি শপগুলোতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার বেড়েছে। খাবারের দোকানগুলো খোলা রয়েছে।
বর্তমানে এ পরিস্থিতি থাকলেও রাশিয়া আগে থেকেই সতর্ক রয়েছে। ৩০ জানুয়ারি প্রথম করোনা সংক্রমিত রোগী শনাক্তের পর রাশিয়া চীনের সঙ্গে থাকা দুই হাজার ৬০০ মাইল সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। সেই সঙ্গে তৈরি করে কোয়ারেন্টিন জোন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুরুতেই এমন ব্যবস্থা নেয়ায় দেশটিতে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মার্চে এসে পরীক্ষা করার ওপর জোর দিয়েছেন। যেখানে রাশিয়া জানুয়ারি থেকেই জোর দিয়েছে পরীক্ষার ওপর। সামান্যতম লক্ষণ দেখা দিলেই তার পরীক্ষা করা হয়েছে।
রাশিয়ায় ডব্লিউএইচও’র প্রতিনিধি ডা. মেলিতা ভজনোভিচ বলেছেন, ‘পরীক্ষা ও শনাক্ত করা, সংক্রামিত রোগী কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তাদের পরীক্ষা করা, আইসোলেশনের মতো ব্যবস্থা যা ডব্লিউএইচও প্রস্তাব করেছে সেগুলো রাশিয়ায় শুরু থেকেই ছিল। সেই সঙ্গে ছিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, যা সত্যি তুলনামূলকভাবে খুবই দ্রুত শুরু হয়েছিল।’