মার্কিন এফ-১৮’র হঠকারিতা ধরা পড়ে ইরানের নিজস্ব তৈরি রাডার ব্যবস্থায়
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা বিভাগ ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি রাডার দিয়েই মার্কিন এফ-১৮’র অবস্থান নির্ণয় করেছে। ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের হঠকারিতা করার সময় এর অবস্থান নির্ণয় করা হয়েছিল এবং সে অপচেষ্টা ভণ্ডুল করে দেয়া হয়। খবর পার্সটুডের।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা বিভাগের হুমকির মুখে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের আকাশসীমা লঙ্ঘনের হঠকারিতা না দেখিয়ে দ্রুত যুদ্ধবিমান এফ-১৮’র সরে যাওয়ার ভিডিও ফুটেজ সামরিক-বিশেষজ্ঞ এবং সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি করে। চলতি ফার্সি নওরোজের প্রথম দিন অর্থাৎ ২০ মার্চ এফ-১৮ সুপার হরনেট ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় আকাশসীমা লঙ্ঘনের চেষ্টা করেছিল। ইরানের হুমকির মুখে যুদ্ধবিমানটি সরে যাওয়ার ভিডিও ফুটেজ সম্প্রতি প্রকাশ করেছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সম্প্রচার সংস্থা আইআরআইবি।এফ-১৮ সুপার হরনেটের মতো অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের অবস্থান বের করতে কি ভাবে ইরান সক্ষম হলো, ফুটেজ প্রকাশিত হওয়ার পর সে প্রশ্ন উঠতে থাকে। বিমানটি কোন দেশের তা ভিডিও ফুটেজে উল্লেখ করা হয় নি। কিন্তু এখন ওই বিমানটি আমেরিকার বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর নির্দেশের কয়েক দিনের মধ্যেই ওই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস। অবশ্য এ খবরের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করে নি ওয়াশিংটন।
ইরানের দক্ষিণের বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটি বন্দর আব্বাসের কাছাকাছি অবস্থিত। কয়েক ধরণের রাডার ব্যবস্থা ওই অঞ্চলের ইরানের আকাশসীমার ওপর অবিরাম শ্যেন নজর রাখছে। এফ-১৮ যুদ্ধবিমানে ইলেক্ট্রনিক লড়াই চালানোর উপযোগী নানা ধরণের সরঞ্জাম বসান আছে। তাই এ বিমানকে নির্ণয়ের মধ্য দিয়ে ইরানের দক্ষতা এবং পারদর্শিতা ফুটে উঠেছে। সমর বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেন, এফ-১৮ যুদ্ধবিমানের অবস্থান নির্ণয় করতে ব্যবহার করা হয়েছিল ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি রাডার ব্যবস্থা ফতেহ্(বিজয়) -১৪।
ইরান ২০১৫ সালে উন্মোচন করেছে ফতেহ্(বিজয়) -১৪ রাডার ব্যবস্থা। ঊর্ধ্বাকাশে উড়ন্ত খুদে লক্ষ্যবস্তুও ৬০০ কিলোমিটার পাল্লার এ রাডারের চোখ ফাঁকি দিতে পারে না। ইলেক্ট্রনিক লড়াই প্রতিরোধে সক্ষম ফতেহ্-১৪কে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার জন্য সেরা রাডার হিসেবে গণ্য করা হয়। এদিকে, ২০১৯ সালের জুনে ইরানের আকাশসীমায় গুপ্তচরগিরি করার সময়ে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী মার্কিন চালকহীন বিমান আরকিউ-৪ গ্লোবাল হককে ভূপাতিত করেছিল।
প্রতিটি আরকিউ-৪এ’র দাম প্রায় ১২কোটি ৩০ লাখ ডলার। অর্থাৎ লকহিড মার্টিনের তৈরি করা অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-৩৫এ লাইটেনিং ২’এর চেয়েও এর দাম পড়ছে ৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার বেশি। ৪৭ ফুট লম্ব জেট-পরিচালিত আরকি-৪এ’র ডানার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩০ ফুট। বোয়িং বিমানের চেয়ে বড় ডানাওলা এ ড্রোন ৬৫ হাজার ফুট ওপর দিয়ে টানা ৩০ ঘণ্টার বেশি উড়তে পারে। গোয়েন্দা তথ্য হাতিয়ে নেয়ার জন্য এতে বসানো থাকে অত্যাধুনিক এবং স্পর্শকাতর নানা যন্ত্র।