পাকিস্তানের কাছে হারার পর রাশিয়ার বদলে ইসরাইলি এয়ার-টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র চাচ্ছে ভারত
২০১৯ সালে আমেরিকার তৈরী ক্ষেপণাস্ত্র-সংবলিত পাকিস্তানি জঙ্গিবিমানের কাছে পরাজিত হওয়ার পর ভারত আর তার রুশ-নির্মিত ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে সন্তুষ্ট নয়।
বস্তুত, ভারত এখন রাশিয়ার এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের স্থানে ইসরাইলি অস্ত্র চাচ্ছে। এমন তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ফ্রন্টলাইন সুখোই-৩০ জঙ্গিবিমানে ইসরাইলি ডারবি এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বসানো হতে পারে। ২৭ ফেব্রুয়ারি লাইন অব কন্ট্রোলে আকাশযুদ্ধে রাশিয়ার তৈরী আর-৭৭ ক্ষেপণাস্ত্রে ত্রুটি দেখা যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
গত বছরের ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি কাশ্মির সীমান্তে আকাশযুদ্ধে পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর আমেরিকার তৈরী এফ-১৬ জঙ্গিবিমানের ছোঁড়া মার্কিন নির্মিত এএইএম-১২০ আমরাম ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি মিগ-২১ বিমান ভূপাতিত হয়। ভারত দাবি করেছে যে তারা একটি পাকিস্তানি বিমান ভূপাতিত করেছে। কিন্তু পাকিস্তান তা অস্বীকার করেছে। অধিকন্তু পাকিস্তান মিগ-২১-এর এক ভারতীয় পাইলটকেও আটক করে। পাকিস্তান টেলিভিশনে তাকে দেখানো হয়। এটি ভারতের জন্য ছিল লজ্জার বিষয়। পরে পাইলটকে ফেরত দেয়া হয়।
পাকিস্তানের দূর থেকে বিমানকে ভূপাতিত করাটা বেশ বিপাকে ফেলেছে ভারতীয় বিমান বাহিনীকে। ভারতীয় বিমানগুলোর মধ্যে দুটি সুখোই-৩০ আমরাম ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিল। সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার দূর থেকে ওই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল। সুখোইগুলো আত্মরক্ষা করতে পারলেও এফ-১৬-এর ওপর বদলা নিতে পারেনি। কারণ বিমানগুলোর অবস্থান ও তাদের রুশি আর-৭৭ ক্ষেপণাস্ত্র। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ৮০ কিলোমিটারের বেশি দূরের টার্গেটে আঘাত হানতে পারে না।
প্রাথমিক সময়ের এআইএম-১২০এ/বির পাল্লা ছিল ৭৫ কিলোমিটার। তবে ২০১০ সালে পাকিস্তান এআইএম-১২০সি-৫ পায়। এগুলোর পাল্লা ১০০ কিলোমিটার। আর সর্বাধিুনিক এআইএম-১২০০-এর পাল্লা ১৬০ কিলোমিটার।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাবেক পাইলট সমীর যোশি বলেন, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মির থেকে এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে পাকিস্তান বিমান বাহিনী চমকে দিয়েছিল ভারতীয় বিমান বাহিনীকে। আমরাম কার্যকরভাবে ভারতীয় বিমান বাহিনীর এয়ার-টু-টয়োর ক্ষেপণাস্ত্রকে পরাভূত করেছিল।
ভারত এখন ইসরাইলের দিকে তাকাচ্ছে। তারা হেরন ড্রোন ও ডারবির মতো বিভিন্ন অস্ত্র কিনছে ইসরাইলের কাছ থেকে। আমরাম সজ্জিত পাকিস্তান বিমান বাহিনীর এফ-১৬ মোকাবিলা করার জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনী আই-ডারবি সংগ্রহ করতে যাচ্ছে। এর পাল্লা ১০০ কিলোমিটার।
তবে এতে আরেকটি সমস্যার সৃষ্টি হবে। রাশিয়ার তৈরী বিমানগুলোতে ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে সমস্যা হবে। তবে ইসরাইলি বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে অবাক করা বিষয় হলো, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র বাতিল করে ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র কিনলেও ভারতীয় বিমান বাহিনী আরো বেশি রুশ অস্ত্রের অর্ডার দিচ্ছে। রাশিয়া এখনো আর-৭৭-এর মাঝারি ও দূর পাল্লার সংস্করণ বিক্রি করার প্রস্তাব দিচ্ছে ভারতকে।