করোনায় ইতালিতে মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৮,০০০
নানাকিছু করেও করোনাভাইরাসে মৃত্যুর মুখ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে আনতে পারছে না ইতালি। রোজ যে হারে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ মরছে, তা শিউরে ওঠার মতোই। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বৃহস্পতিবার ইতালিতে আরো ৭১২ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ইউরোপের এই দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮,২১৫ জন। তার মধ্যে মেডিক্যাল টিমের সদস্য ৩৯ জন। ইউরোপের আর কোনো দেশে এত সংখ্যক মৃত্যু হয়নি। তবে, ইতালির পিছনে ছুটছে স্পেন। মৃত্যুতে ইতালির অর্ধেক (৪,১৪৫) হলেও, স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৪৯৮ জন।
ইতালিতে এক দিনে নতুন আক্রান্ত ৬ হাজার ১৫৩ জন। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ ৩ হাজার ৪৯৮ জন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ হাজার ৩৬১ জন। তার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৯৯৯ জন।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতের রিপোর্ট অনুযায়ী ইতালিতে মোট আক্রান্ত ৮০ হাজার ৫৩১ জন বলে জানিয়েছেন নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান অ্যাঞ্জেলো বোরেল্লি। তিনি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। করোনায় আক্রান্তদের সেবা করতে গিয়ে, সংক্রমণের শিকার হওয়ায়, ইতালির এক তরুণী নার্সও বুধবার আত্মহত্যা করেছেন।
চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে ইতালি এখন আক্ষরিক অর্থেই মৃত্যুপুরী। প্রধানমন্ত্রীর আর্জিতে সাড়া দিয়ে সে দেশের প্রবীণ চিকিত্সকেরাও করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন। রাশিয়া, কিউবা, চীনের একাধিক মেডিক্যাল টিম এখন ইতালিতে। আক্রান্তদের চিকিত্সায় প্রাণপাত করছেন। তবে, এখন পর্যন্ত কিন্তু ইতালির পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তে জানান, লকডাউন অগ্রাহ্য করে অপ্রয়োজনে রাস্তায় বেরোনোয় ২৫ মার্চ পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকে ২০০ ইউরো করে জরিমানা দিতে হবে। তিন থেকে ছ-মাসের হাজতবাসও হতে পারে।
ইতালিতে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন রয়েছে। যা পরিস্থিতি, তাতে লকডাউন বাড়ানো হতে পারে।
এদিকে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে দক্ষিণ আফ্রিকায় এক খ্রিস্টান পাদ্রির পরামর্শে ডেটল খেয়ে ৫৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে খবর। নাইরোবি থেকে প্রকাশিত দৈনিক কেনিয়া টুডের খবরে এমনটাই দাবি করা হয়। তাদের খবর অনুযায়ী, ফাদার ‘রুফুস ফালা’ সম্প্রতি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তার ভক্তদের ডেটল খেতে দিয়েছিলেন। পাদ্রির উপর অগাধ আস্থায় গির্জায় দাঁড়িয়েই সেই জীবাণুনাশক পান করেন ভক্তরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। মৃত্যু হয় ৫৯ জনের। যদিও, কেনিয়া টুডের এই রিপোর্ট নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।