ইউরোপকেও শরণার্থীদের ভার বহন করতে হবে : এরদোগান
বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সর্বশেষ অবস্থান ইদলিবে সঙ্ঘাত বৃদ্ধির মধ্যে ইউরোপকে সতর্ক করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, ইউরোপকেও শরণার্থীদের ভার বহন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা যখন সীমান্ত খুলে দিলাম, তখন বিভিন্ন পক্ষ আমাদের বলতে লাগল, সীমান্ত বন্ধ করো। আমি তাদেরকে বললাম, সীমান্ত এখন উন্মুক্ত। তোমাদেরও তার ভার বহন করতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নমুখী (ইইউ) হতে আগ্রহী শরণার্থীদের তুরস্ক আর আটকাবে না, এ ঘোষণার পর সপ্তাহ শেষে অন্তত ১৩ হাজার শরণার্থী তুরস্ক সীমান্ত হয়ে ইইউমুখী হয়েছে। শরণার্থীদের মধ্যে রয়েছে আফগান, সিরীয় ও ইরাকিরা। গ্রিস সীমান্তে দেশটির পুলিশ শরণার্থীদের প্রবেশে বাধা প্রদান করলে সেখানে সংঘর্ষ বাধে। গ্রিক পুলিশ শরণার্থীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং শরণার্থীরাও পাথর নিক্ষেপ করে পাল্টা জবাব দেয়।
তুরস্কে প্রায় ৪০ লাখ শরণার্থী অবস্থান করছে, যাদের বড় অংশ সিরীয়। ইইউ থেকে শত কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি আদায়ের মাধ্যমে তাদেরকে ইউরোপমুখী হওয়া থেকে বিরত রেখেছে তুরস্ক। গত রোববার এরদোগান ঘোষণা দেন, শরণার্থীদের ইউরোপমুখী হওয়া থেকে আর রুখবে না আঙ্কারা। গ্রিসের অনুরোধে ইইউর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে। তারা শরণার্থী প্রবেশের ঝুঁকি নিয়ে শঙ্কিত বলে জানা গেছে। গ্রিস সরকারের মুখপাত্র স্টেলিওস পেটসাস জানান, উত্তর-পূর্ব সীমান্তে স্থল ও সমুদ্রপথে টহল জোরদার করছে এথেন্স। যারা অবৈধভাবে গ্রিসে প্রবেশ করেছে, শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়ে তাদের আবেদনপত্র গ্রাহ্য হবে না।
গ্রিস উপকূলে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
ইউরোপে ঢোকার সুযোগ করে দিতে তুরস্ক তাদের সীমান্ত খুলে দেয়ার পর সাগরে নৌকা উল্টে অভিবাসন প্রত্যাশীদের একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রিসের কর্মকর্তারা। সোমবার গ্রিসের লেসবস দ্বীপের কাছে নৌকা উল্টে যাওয়ার পর সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা ওই সিরীয় ছেলেশিশুটির মৃত্যু হয়। নিহত শিশুটির বয়স ৬ বলে জানিয়েছে গ্রিস কোস্টগার্ড; এর বাইরে আর কোনো বিবরণ দেয়নি তারা। গ্রিক ও তুর্কি পুলিশের পাল্টাপাল্টি কাঁদানে গ্যাসে দুই সীমান্তের মাঝে ‘নো-ম্যানস ল্যান্ডে’ শরণার্থীদের আটকে পড়ার ঘটনা ২০১৫-১৬ সালের শরণার্থী সঙ্কটকে মনে করিয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য রয়টার্সের। সেবার ১০ লাখেরও বেশি মানুষ তুরস্ক হয়ে ইউরোপ ঢুকেছিল। এজিয়ান সাগরে সেবার প্রায় ৪ হাজার মানুষ ডুবে মরেছিল। ২০১৫-১৬ সালের ঢলে ইউরোপ ঢুকতে চাওয়া প্রায় ৪২ হাজার শরণার্থী এখনো গ্রিসের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করছেন।