লটারি করে মেয়েদের নাম নির্বাচন করে র্যাগিংয়ের নামে ছাত্রলীগ নেতার অশালীন প্রস্তাব
আবারও র্যাগিং বিতর্ক। এবার শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে সরকারী শামসুর রহমান কলেজে র্যাগিংয়ের নামে ৬ নারী শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
গত ১৭ই ফেব্রুয়ারী সোমবার দুপুর ১২টা ২৯ মিনিটের সময় কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা সিসিটিভির ১০ নাম্বার ক্যামেরায় ধরা পরে কলেজের একাদশ শ্রেনীর ৬ ছাত্রীকে উত্যক্ত করার এমন দৃশ্য। টিফিনের সময় ক্যান্টিনে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীদের গতি রোধ করে বিভিন্ন ধরনের কুপ্রস্তার ও অশালীন আচরণ করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইয়ামিন সিকদার ও তার সহযোগীরা। ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণের পুরো ঘটনাই মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন আরেক ছাত্রলীগ কর্মী মারুফ রায়হান।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে র্যাগিংয়ের নামে ক্যাম্পাসে লটারি করে মেয়েদের নাম নির্বাচন করে তাদেরকে খারাপ-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো চক্রের সদস্যরা। এরই অংশ হিসেবে ওই দিন ছাত্রীদের নির্বাচন করে উত্যক্ত করা হয় বলে দাবী ভুক্তভোগীদের। পালিয়ে যেতে চাইলে তাদের পথ আটকে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়াসহ বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে চক্রটির বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে উল্টো বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয় তাদের।
ভুক্তভোগী এক ছাত্রী জানায়, এখন তো আমরা আতঙ্কে আছি। এরকম হলে তো আমাদের অভিভাবকরা আর কলেজে পাঠাবেনা। কে নিরাপত্তা দেবে আমাদের।
ঘটনা জানাজানি হলে ক্যাম্পাস ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্তরা। যোগাযোগর অনেক চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত কাউকে। কলেজ ক্যাম্পাসে এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগের ওই নেতার বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে প্রতিবাদ করার সাহসও পায়না কেউ। লজ্জা আর অপমানে এরই মধ্যে কলেজ ছেড়েছে ৩ শিক্ষার্থী।
এ ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কলেজ প্রশাসন। সংগ্রহ করা হয়েছে ওই ঘটনার সকল সিসিটিভি ফুটেজ। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সরকারী সামসুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক মোল্লা।
কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করতে দোষীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দাবী করছে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।