গাজীপুরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু, হত্যার অভিযোগ স্বজনদের
গাজীপুরে পুলিশ হেফাজতে ইয়াসমিন বেগম (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্বজনরা নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগ করলেও পুলিশ বলছে ওই নারী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই নারী মৃত্যুবরণ করেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের উপ-কমিশনার মনজুর রহমান জানান, গাজীপুর সদর থানার ভাওয়াল এলাকার আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে মাদক বেঁচা-কেনা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় একাধিক মাদক মামলার আসামি ইয়াসমিনকে ১শ’ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হলে ইয়াসমিন অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানোর পরামর্শ দেন। পরে ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতিকালে হাসপাতালে ওই নারীর মৃত্যু হয়।
তিনি আরো জানায়, নিহত ইয়াসমিন ও স্বামী আব্দুল হাই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
নিহতের ছেলে আরাফাত রহমান জিসান জানান, রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তি আমাদের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলেন। সেখানে গিয়ে আমরা তার (ইয়াসমিন) মৃত্যুর খবর জানতে পারি। স্বজনরা হাসপাতালের ভিতরে যেতে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। পুলিশের ব্যাপক নির্যাতনে গৃহবধূ ইয়াসমিনের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ইয়াসমিন হৃদরোগী ছিলেন। তিনি স্ট্রোক করায় হার্টে দুটি ব্লক ছিল ।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইয়াসমিন মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের শরীরে বাহ্যিকভাবে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে ময়নাতদন্তের পর তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এদিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ঘটনা তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আজাদ মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।