ক্যাম্পাসে আধিপত্য রাখতে প্রয়োজনে ১০ খুন: ছাত্রলীগ নেতা
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) আধিপত্য রাখতে প্রয়োজনে ১০ খুন বলে ঘোষণা দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহেদ মুরাদ শাহীন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে নগরীর নাসিরাবাদের দুই নম্বর সড়কে চমেকের ছাত্রাবাসে নবাগত ছাত্রদের উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেছেন এই ছাত্রলীগ নেতা। এ বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
তিনি নবগতদের উদ্দেশ্য করে বলেন, এখানে ছাত্রলীগ এখনো আছে। সিএমসিতে (চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ) মোট ছাত্র কতজন, জানিস? এক হাজারের ওপর হবে। এক হাজার জনকে ভালোবাসার জন্য যদি ১০ জনকে যদি মেরে ফেলা লাগে, আমি মেরে ফেলতে পারব। আমার কী হবে, তাতে কিছু যায় আসে না।’
শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে ওয়াহেদ মুরাদ শাহীন বলছেন, ‘এখানে (চমেক ক্যাম্পাস) নাছির (মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন) ভাইয়ের রাজনীতি সবাই করে গেছে। চমেক ছাত্রলীগ পরিবার আজীবন থাকবে। এই ক্যাম্পাসকে সুন্দর রাখার জন্য, ক্যাম্পাসের পরিবেশ ভালো রাখার জন্য যা করা লাগে, আমরা করব।’
নবাগত ছাত্রদের উদ্দেশে এই ছাত্রলীগ নেতা আরও বলেন, ‘এরকম ইতিহাসও আছে যে ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য, জামায়াত শিবিরের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এখানে মার্ডারও হয়েছে। কেন হয়েছে জানিস? শুধু বড় ভাইদের কথা শোনে নাই, আদর্শ থেকে দূরে সরে গেছে, ক্যাম্পাসে অরাজকতা তৈরি করতে চেয়েছে বলে। কিচ্ছু হয়নি। কারা করছে? বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ করছে।’
‘ক্যাম্পাসে ধারা বজায় রাখতে হবে। ছাত্রলীগের কমিটির যতগুলো পোলাইপান (ছেলে) আছে, পার্টি থেকে যারা চলে গেছে, ওনারাও আমাদের পরিবারের সদস্য, আমাদের সিনিয়র ভাই। এটা (ছাত্রলীগ) আজীবন থাকবে,’— রেকর্ডে এমনও বলতে শোনা গেছে শাহীনকে।
ওয়াহেদ মুরাদ শাহীন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ৫৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি ২০১৬–১৭ শিক্ষাবর্ষে চমেকে ভর্তি হন।
জানা গেছে, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যেন নিজেদের আধিপত্য বজায় থাকে, সেটা বোঝাতে এবং নবাগতদের নজরে রাখার নির্দেশনা দিয়ে জ্যেষ্ঠ্য নেতারা ওয়াহেদ মুরাদ শাহীনসহ ছাত্র সংসদ এবং কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকে ছাত্রাবাসে পাঠান। সেখানে ওয়াহেদ মুরাদ শাহীন হুমকির সুরে কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণে আছে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির ক্রিয়াশীল থাকলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেখানে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য আছে।