স্বৈরাচার সরকারের প্রেতাত্মারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে, তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে: ডা. জাহিদ
স্বৈরাচার সরকারের প্রেতাত্মারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে, তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, গত ১৭ বছরে ভারতকে বাংলাদেশ শুধু দিয়েই গেছে। বলা হয়েছে বাংলাদেশ দিয়ে ভারত ট্রানজিট নিলে বাংলাদেশ নাকি সিঙ্গাপুর হবে।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার টুইটের যে মনোভাব প্রকাশ করেছেন সেটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যে ষড়যন্ত্র রেসকোর্সে হয়েছিল সেটিই। গত ১৭ বছরে ভারতকে বাংলাদেশ শুধু দিয়েই গেছে। বলা হয়েছে বাংলাদেশ দিয়ে ভারত ট্রানজিট নিলে বাংলাদেশ নাকি সিঙ্গাপুর হবে। তাহলে আখাউড়া দিয়ে ভারতের এত ট্রাক গেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি শুধু কমতেই আছে। বিগত বছরগুলোতে আমাদেরকে শুধু ভুল বোঝানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাশে দাঁড়িয়েছিল সেজন্য কৃতজ্ঞ। তবে বিগত বহু বছর তারা কড়ায় গণ্ডায় প্রতিদান আদায় করেছে। আজো ফারাক্কার পানির সমস্যা নিরসন হয়নি। সীমান্তে মানুষ মারা হচ্ছে। ভারতের বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশকে অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যার সৃষ্টি করা হয়। তারা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে আয়োজিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টে ভারত সরকার ও মিডিয়ার অপপ্রচার এবং ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিতে প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার বহু বছর পর হয়েছে। সুতরাং আগামীতেও সেরকম হবে না সেটি ভাবার কিছু নেই। তারা (আওয়ামী লীগ) বাড়ি-ঘর দখল ও গায়েবি মামলা দিয়ে নির্যাতন করেছে। আল্লাহ তার বান্দাকে অবকাশ দেন যদি কেউ তার বুঝতে পারে। কিন্তু তা না হলে কি পরিণতি হয় সেটির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এত পরিমাণ গুম খুন ও লুট করেও রক্ষা হয়নি। নিজেকে বাঁচার ভয়ে আপনি (সালমান এফ রহমান) নিজের দাঁড়ি কামিয়েছেন। অতএব অহংকার পতনের মূল। প্রত্যেকটা কাজের হিসাব কিন্তু আগামী প্রজন্মের কাছে দিতে হবে। কেউ হয়তো নেদারল্যান্ড গেছেন। কলকাতা গেছেন। কেউ চট করে ঢুকার চেষ্টা করছেন। সৎ সাহস থাকলে ঢুকেন বিচারের মুখোমুখি হোন।
তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্র মেরামত করার লক্ষ্যে ৩১ দফা নিয়ে কাজ করছি। অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। এরশাদের পতনের সময় কতদিন পর নির্বাচন হয়েছিল সেটি সবারই মনে থাকার কথা। নির্বাচন করতে কতদিন লাগে সেটি দেশের মানুষ জানে। যেহেতু পতিত স্বৈরাচার সরকার সাড়ে ১৫ বছরে দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। সেজন্যই সব রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছে। কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, সব সংস্কার তো আপনারা করতে পারবেন না। কখন নির্বাচন হবে সেটা স্পষ্ট করুন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন একরকম। আবার তার প্রেস সচিব বলেন আরেক রকম। আপনাদেরকে তো আমরাই সবাই মিলে সহযোগিতা করছি। আপনারা কে কথা বলবেন দায়িত্ব নিয়ে বলুন। না হলে মানুষ বিভ্রান্ত হবেন।
তিনি আরও বলেন, মানুষের দুর্বিষহ জীবন। এখান থেকে উত্তরণের জন্য জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রেতাত্মারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনুন। তবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। যারা দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র করতে চায় তাদেরকে দেশবাসী স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে ইনশাআল্লাহ।