নওগাঁয় পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তসহ ৯ দফা দাবিতে মানববন্ধন
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও চাকরিচ্যুত সকল বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালসহ ৯ দফা দাবিতে নওগাঁয় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের মুক্তির মোড় শহীদ মিনারের সামনের সড়কে ‘বিডিআর কল্যাণ পরিষদ ও ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্য এবং তাদের পরিবারবর্গ নওগাঁ জেলা’ ব্যানারে দুই ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়।
চাকরিচ্যুত বিডিআর নায়েব সুবেদার আব্দুস সামাদ সাহানার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে চাকরিচ্যুত সিপাহী দেলোয়ার হোসেন, সিপাহী সোহরাব হোসেন, সিপাহী জিয়াউল হক, আটক সিপাহী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রেশমী বানু, পিলখানায় নিহত নায়েক সুবেদার মোজাম্মেল হকের ছেলে মোহায়মেনুল হকসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে দুই শতাধিক চাকরিচ্যুত ও কারাবন্দি বিডিআর সদস্য এবং তাদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।
বক্তারা বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পরিকল্পিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার সেনাবাহিনীর সামর্থ্য ক্ষুণ্ন করতে বিডিআরকে ধ্বংস করার জন্য, প্রতিশোধ স্পৃহা থেকে এবং ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করতে নীল নকশার অংশ হিসেবে সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র পূর্বক পিলখানা হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করে। ওই হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন শাহাদাৎ বরণ করেন। ঘটনা পরিবর্তী ফ্যাসিস্ট সরকার প্রহসনের বিচারের নামে আলামত ধ্বংস ও নিরীহ ৫৪ জন বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যা করে। ঘটনার পর থেকে হাজার হাজার বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবার-পরিজন মানবেতর জীবন যাপন করছে। চাকরিচ্যুতদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করা এখন সময়ের দাবি।
বক্তারা আরও বলেন, পিলখানা ঢাকাসহ সারাদেশে বিডিআর ব্যাটালিয়ন ও সেক্টরে গঠিত সকল প্রহসনের বিশেষ আদালতকে নির্বাহী আদেশে বাতিল, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মোটিভ উদ্ধার ও শনাক্তকরণে তদন্ত কমিটি গঠন, ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে পিলখানা ট্রাজেডি দিবস ঘোষণা, হত্যাকাণ্ড পরবর্তী তদন্ত/জিজ্ঞাসাবাদে নিরাপত্তা হেফাজতে যেসব নিরীহ বিডিআর সদস্যদের নির্যাতনপূর্বক হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ ও মৃত সকল পদবির পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসন, নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের নির্যাতন করে যারা হত্যা করেছে তাদের শনাক্তপূর্বক বিচারের আওতায় নিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়াও বিশেষ আদালত কর্তৃক বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষ হওয়া বিডিআর সদস্যরা যারা প্রহসনের বিস্ফোরক মামলায় দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে কারাবরণ করছেনে তাদের অনতিবিলম্বে জামিন ও মামলা হতে অব্যাহতি দিতে হবে।
হাবিলদার সুলতান মাহমুদের মেয়ে সানজিদা আক্তার বলেন, আমার বাবা ৪১ ব্যাটালিয়নের অধীনে সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২৬ বছর চাকরি করেছেন। কিন্তু পিলখানার ঘটনায় মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটতে হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে প্রতিবেশীরা অনেক কটু কথা বলে আমাদের সম্মানহানি করে। তাই আমার নিরপরাধ বাবার চাকরি ফিরে দেওয়ার দাবিতে রাজপথে নেমেছি।