‘কা আমরা মানব না’ ফের জ্বলছে সেই প্রতিবাদের আগুন

0

কা আমরা মানব না’ আসামের রাজপথে আবার সেই পুরনো স্লোগান। ফের জ্বলছে সেই প্রতিবাদের আগুন। ধরনা, বিক্ষোভে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি, রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হচ্ছে, পোড়ানো হচ্ছে সিএএ (কা)-এর বিধি।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে রক্তাক্ত হয়েছিল আসাম। পুলিশের গুলিতে মৃতু্য হয়েছিল পাঁচজনের। এবার সেই পরিস্থিতি হয়নি এখনো। কিন্তু দেশের সাধারণ নির্বাচনের মুখে অসমিয়া জাতীয়তাবাদী শিবির, বিজেপি-বিরোধী সব রাজনৈতিক দল অন্দোলনের পথ নিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য, জাতিগত বৈষম্যমূলক আইনের প্রতিবাদ করা এবং বিজেপি সরকারকে উত্খাত করা। ফলে পরিস্থিতি যে কোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে।

বিধি প্রণয়নের পর সোমবার সন্ধ্যা থেকে আসামসহ পুরো ভারতে বলবত্ হয়েছে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী (সিএএ)। ফলে জাতিগত বিভাজন আরও পরস্ফিুট হয়েছে রাজ্যে। ভবিষ্যতের অসুরক্ষিতবোধ করছে আসামের মূল স্রোতের অসমিয়া সমাজ। ভাষা-ঐতিহ্য বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে সামাজিক আক্রোশের মুখে পড়েছে হিন্দু বাঙালিরা। কারণ, তাদের লক্ষ্য করেই সিএএ কার্যকরী করা হয়েছে। আবার আসামের মুসলমান সমাজও আতঙ্কিত। কারণ, নাগরিকত্ব দিয়ে হিন্দুদের সুরক্ষিত করে বহিষ্কারের খাঁড়া তাদের ওপরই ঝুলিয়ে রেখেছে বিজেপি সরকার।

তিন প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দিতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সংসদে গৃহীত হয় ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী (সিএএ)। আইন অনুযায়ী, ধর্মীয় নিপীড়নের ফলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আগত হিন্দু, শিখ, বেৌদ্ধ, জৈন, খ্রষ্টিান ও পার্সিরা নাগরিকত্ব পেতে পারেন।
আইন প্রণয়নের পর চার বছর ধরে সবকিছু স্থবির ছিল, তবে সাধারণ নির্বাচনের ঠিক প্রাক্কালে আইনের বিধি জারি করে সরকারি উদ্যোগেই সমাজে ধর্মীয় মেরূকরণের প্রচষ্টো চালানো হচ্ছে। হিন্দু ভোটে ফায়দা তোলাই শাসক বিজেপির মূল লক্ষ্য।

আসলে সিএএ-কে ঘিরে একশ্রেণির লোকের মধ্যে নাগরিকত্ব লাভের মিথ্যা আশা জাগানো হচ্ছে। অন্যদিকে আসামের মূল বাসিন্দা অসমিয়াদের মধ্যে ছড়ানো হচ্ছে ভাষা-সংস্কৃতি বিপন্ন হওয়ার ভুল আতঙ্ক। ফলে আসামের সমাজে হিন্দু-মুসলিম, অসমিয়া-বাঙালিদের মধ্যে প্রবল মেরূকরণ ঘটেছে।

অসমিয়া জাতীয়তাবাদীদের বদ্ধমূল ধারণা, সিএএ-এর ফলে আসামে বসবাসকারী প্রচুরসংখ্যক অবৈধ’ বাংলাদেশি হিন্দুরা যেমন নাগরিকত্ব পাবেন, তেমনই ভারতীয় নাগরিকত্বের আশায় বাংলাদেশ থেকেও চলে আসবেন লাখ লাখ হিন্দু। এর ফলে বাংলাভাষীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়ে অসমিয়া ভাষার বিলোপ ঘটবে অচিরেই।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com