ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকরের পরপরই তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আইন কার্যকরের দিন গত সোমবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ হয় তামিলনাড়ু ও কেরালায়। গতকাল মঙ্গলবার বিক্ষোভ হয়েছে আসামে। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গেও গতকাল বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
এই আইন কার্যকরের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে আজ বুধবার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস। দলটির নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই আইন মানেন না। একই কথা বলেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন ও কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও।
সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সিএএ কার্যকর হয়েছে। যদিও এই আইন চার বছর আগে পাস করেছিল শাসক দল বিজেপি। তবে কার্যকর করতে পারেনি। আইন অনুসারে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সিধর্মীয় সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণে ভারতে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। আইন কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের নাগরিকত্ব চাইলে কীভাবে আবেদন করতে হবে এবং এই আবেদনের জন্য কী কী লাগবে, তা জানিয়ে দিয়েছে। তবে আইনে এটা উল্লেখ করা হয়নি, ভারতে যাওয়া মুসলমানরা নাগরিকত্ব পাবেন কি না। ফলে আইনটি পাসের পরপরই সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচকদের দাবি, মুসলিমদের বিতাড়িত করতেই আইনটি করা হয়েছে।
লাইভ মিন্টের খবরে বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকরের প্রতিবাদে আসামে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে গুয়াহাটিতে পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ। রাজ্যের সব বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নেমেছেন।
কংগ্রেসের কেরালার নেতা ভিডিডি সাথিসান আইনের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘দেশে বিভাজন সৃষ্টি করতেই এই আইন কার্যকর করা হয়েছে। রাজনৈতিক সুবিধা পেতে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি এটা কার্যকর করেছে। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করি। আইনিভাবে এর বিরোধিতা করতে আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ নেব।’ এই রাজ্যে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সবাদী)–সিপিআই (এম) এবং কংগ্রেস পৃথক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
এদিকে তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে সোমবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা মোমবাতি হাতে সড়কে নেমে আসেন। এ সময় তাঁরা সিএএবিরোধী স্লোগান দেন।