প্রতিটি ঘটনার প্রতিশোধ কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নেবে ইরান
সিরিয়ায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত সৈয়দ রাজি মুসাভি নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ ইরান কতটা ভয়াবহভাবে নিতে পারে, তার ইঙ্গিত দিয়েছে ইরান।
ইরানের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষক আলী আকবর দারেনি বলেছেন, ইসরাইলের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া অবশ্যই জানাবে ইরান। প্রতিটি ঘটনার প্রতিশোধ কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নেবে তারা।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলী আকবর দারেনি বলেছেন, বিদেশে ইরানের এক শীর্ষ জেনারেলকে হত্যা করে ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করেছে। এর দ্বারা তারা রেড লাইন অতিক্রম করে ফেলেছে। তাই অবশ্যই ইরান এর প্রতিশোধ নেবে। কিন্তু কিভাবে তারা এর প্রতিশোধ নেবে, তা এই মুহূর্তে পরিষ্কার নয়।
এদিকে, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে এক ইসরাইলি বিমান হামলায় ইরানের রেভুলশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সিনিয়র উপদেষ্টা সৈয়দ রাজি মুসাভি নিহত হয়েছেন। সোমবার তাকে হত্যা করা হয়। ইরান এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে এর প্রতিশোধ গ্রহণের সংকল্প ব্যক্ত করেছে।
তিনি ইরান ও সিরিয়ার মধ্যকার সামরিক যোগাযোগে সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন। ফলে এই অঞ্চলে মিত্র এবং প্রক্সিদের মধ্যকার নেটওয়ার্কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতেন।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনার খবরে বলা হয়, দামেস্কের উপকণ্ঠে জেইনাবিয়া জেলায় কয়েক ঘণ্টা আগে এক জায়নবাদী হামলায় নিহত হয়েছেন।
এক পৃথক বিবৃতিতে রাষ্ট্রীয় টিভিতে আইআরজিসি জানায়, এই অপরাধের জন্য জায়নবাদী সরকারকে মূল্য দিতে হবে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে নিয়মিত সম্প্রচার স্থগিত করে মুসাভির নিহত হওয়ার খবর প্রচার করে তাকে সিরিয়ায় সবচেয়ে অভিজ্ঞ আইআরজিসি উপদেষ্টা হিসেবে অভিহিত করা হয়।
গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সাথে ইসরাইলের যুদ্ধটি বৃহত্তর আঞ্চলিক সঙ্ঘাতে রূপ নিতে পারে- এমন আশঙ্কায় এই হামলা হলো। ইতোমধ্যেই দক্ষিণ লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর সাথেও ইসরাইলের লড়াই চলছে।
আল জাজিরার সংবাদদাতা আলি হাশেম দক্ষিণ লেবানন থেকে বলেন, সিরিয়া এবং লেবাননে আইআরজিসির কমান্ডাদের মধ্যে মুসাভি ছিলেন সবচেয়ে প্রাচীন। তিনি সেই ১৯৮০-এর দশক থেকে এই এলাকায় কাজ করছেন।
হাশেম বলেন, সূত্র অনুযায়ী, মুসাভিকে হত্যা করার জন্য আগেই কয়েকবার চেষ্টা করেছিল ইসরাইল। তবে এবারই তারা সফল হলো। ইরান থেকে সিরিয়া এবং ইরাক থেকে সিরিয়ায় অস্ত্র পাচার এবং সেগুলো সবশেষে লেবাননে হিজবুল্লাহর কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজটি তিনিই করছেন বলে ইসরাইল অভিযুক্ত করে আসছিল। তাছাড়া ইরানের ভাষায় ‘এক্সিস অব রেসিসস্ট্যান্সে’ তিনি ছিলেন খুবই প্রভাবশালী।’
ইরনার খবরে বলা হয়, আইআরজিসির এলিট কুদস ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলাইমানির খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন মুসাভি। ২০২০ সালে ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় কাসেম সোলাইমানি নিহত হয়েছিলেন। ইরানের আঞ্চলিক কার্যক্রমে সোলাইমানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।
সূত্র : আল জাজিরা