হামাস-ইসরায়েল ‘সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি’র কাছাকাছি পৌঁছেছে

0

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাস-ইসরায়েলের তীব্র লড়াইয়ের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় জিম্মি মুক্তির আলোচনায় শেষ পর্যন্ত অগ্রগতির লক্ষণ দেখা গেছে। কয়েক সপ্তাহের পরোক্ষ আলোচনার পর রোববার যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত মাইকেল হারজোগ ইঙ্গিত দিয়েছেন হামাসের সাথে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে যাচ্ছে। তিনি বলেছেন, এই সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জিম্মি মুক্তি পাবেন বলে আশা করা যায়।

গত ৭ অক্টোবর সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গাজার ক্ষমতাসীন সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাস। ওই দিন স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইসরায়েলে ঢুকে শত শত ইসরায়েলিকে হত্যা এবং ২৪২ জনের বেশি ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে হামাস। এই হামলার পর গাজায় তীব্র আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। প্রথমে বিমান হামলা চালানো হয়, পরে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল হামলাও শুরু করা হয়। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন গাজা উপত্যকা থেকে হামাসকে নির্মূল করা পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, গত মাসের শেষের দিকে ইসরায়েলি ট্যাংক ও সৈন্যরা গাজায় হামলা চালিয়ে গাজা শহরের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্বের বিশাল এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

তবে হামাস ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গাজা শহরের কিছু অংশ, জাবালিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা এবং বিচ শরণার্থী শিবিরসহ ঘনবসতিপূর্ণ উত্তরাঞ্চলে গেরিলা ধাঁচের যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে হামাস যোদ্ধারা।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত মাইকেল হারজোগ এবিসি নিউজের ‘‘দিস উইক’’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইসরায়েল আশাবাদী যে ‘‘আগামী কয়েক দিনে’’ হামাসের হাত থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জিম্মি মুক্তি পাবে।

এর আগে, গত ১৫ নভেম্বর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা উপত্যকায় তিন দিনের বিরতির বিনিময়ে ৫০ জিম্মিকে মুক্তির শর্তে ইসরায়েল-হামাসের মাঝে এক চুক্তিতে পৌঁছাতে চান কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা। আলোচনার বিষয়ে অবগত কাতারের এক কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতির ওই সময় গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের জরুরি ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতির সাধারণ রূপরেখায় রাজি হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল এখনও এই চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছে। রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, জিম্মিরা কখন মুক্ত হতে পারেন, তা বলার মতো অবস্থায় আমি নেই।

তিনি বলেন, ‘‘তারা মুক্তি পাবে আমি সেটা নিশ্চিত হতে চাই এবং তারপর আমি এই তথ্য আপনাদের জানাব।’’ ভার্জিনিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সাথে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এই মন্তব্য করেন জো বাইডেন।

একই দিন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, হামাস-ইসরায়েলের মাঝে সম্ভাব্য একটি চুক্তির সামান্য কিছু প্রধান প্রতিবন্ধকতা আছে। অত্যন্ত ছোটোখাট কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তবে চুক্তির ‘‘বাস্তবিক ও যৌক্তিক’’ কিছু বিষয়ে এখনও ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।

চুক্তির বিষয়ে হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘‘অত্যন্ত জটিল, অত্যন্ত সংবেদনশীল’’ এই আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে।

সূত্র: রয়টার্স।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com